শিগগিরই লন্ডনে মোদি-হাসিনার বৈঠক: আনন্দবাজার

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে চলতি মাসের তৃতীয় সপ্তায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠক হতে পারে।ওইসময় কমনওয়েলথ হেড অব গভর্নমেন্ট মিটিংয়ে যোগ দিতে যুক্তরাজ্য যাচ্ছেন মোদি। বাংলাদেশ থেকে যাচ্ছেন শেখ হাসিনাও। এমন খবর প্রকাশ করেছে ভারতের প্রভাবশালী বাংলা দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা।

কূটনীতিক সূত্রের খবর, ওই সম্মেলনের ফাঁকে তাদের মধ্যে একটি বৈঠকের জন্য তৎপরতা শুরু করেছে উভয় পক্ষ।
ঠিক এক বছর হতে চললো মোদি-হাসিনার বৈঠক হয়েছে। এর মধ্যে কোনো তৃতীয় দেশেও মুখোমুখি হননি উভয় নেতা। দুটি দেশেই নির্বাচন কড়া নাড়ছে। লন্ডনের বৈঠকটি হলে বর্তমান সরকারের আমলে এটাই হবে দুদেশের শেষ শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠক। ফলে এই বৈঠকের গুরুত্ব গোটা দক্ষিণ এশিয়ার জন্যই তাৎপর্যপূর্ণ। সম্প্রতি ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল বিমসটেক-এর নিরাপত্তা বিষয়ক বৈঠকে যোগ দিতে ঢাকা এসেছিলেন। সামনে বাংলাদেশে আসবেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিজয় গোখলে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানাচ্ছে, বাংলাদেশ সরকারের আরও বেশি আস্থা অর্জন করাটাকে এখন অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। জোর দেয়া হচ্ছে সাংস্কৃতিক কূটনীতির দিকেও। ১০ এপ্রিল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নিয়ে একটি আলোচনাসভায় যোগ দিতে ঢাকা আসবেন রবীন্দ্রভারতীর উপাচার্য সব্যসাচী বসু রায় চৌধুরি ও বিশ্বভারতীর উপাচার্য সবুজকলি সেন।

ভারতীয় সরকারি সূত্র জানাচ্ছে, লন্ডনে বৈঠক হলে আন্তর্জাতিক এবং আঞ্চলিক সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা করবেন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী। তবে ওই বৈঠকে তিস্তা নিয়ে কোনো পাকা কথা দেয়া সম্ভব হবে না মোদির পক্ষে। সম্প্রতি ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তিস্তা ছাড়া আরও অনেকগুলো দিক রয়েছে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে। বাংলাদেশের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে ভারত পাশে রয়েছে। যে কাজগুলো ইতোমধ্যেই চলছে তার পাশাপাশি, নতুন কোন ক্ষেত্রে সমন্বয় বাড়ানো যায়, তা নিয়ে কথা বলবেন মোদি-হাসিনা। কথা হবে আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিয়েও। কট্টর মৌলবাদ ও সন্ত্রাসের মোকাবেলা করতে পারস্পরিক সহযোগিতা আগামী দিনগুলোতে আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে বলে মনে করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। প্রতিবেশী রাষ্ট্রে নির্বাচনের আগে হিংসার ঘটনা বাড়লে তার প্রভাব সীমান্তে পড়তে পারে— এই উদ্বেগ রয়েছে নয়াদিল্লির। নিরাপত্তা সহযোগিতা আরও আঁটোসাঁটো করা নিয়ে কথা চলছে দুই দেশের।

তবে তিস্তা নিয়ে নির্দিষ্ট কোনো পরিকল্পনা না থাকলেও রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের জন্য ভারত যে আন্তরিক, এবার সে কথা স্পষ্টভাবেই জানানো হবে ঢাকাকে। রাখাইন প্রদেশকে আর্থ-সামাজিকভাবে ঢেলে সাজাতে কী পদক্ষেপ নিলে সুবিধা হয়, সে বিষয়ে ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ সরকারের কাছে জানতে চেয়েছে ভারত। গেলো বছরের শেষে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত জেলা রাখাইনের উন্নয়নের জন্য একটি চুক্তিপত্রে সই করেছে ভারত। সেখানে প্রস্তাবিত আবাসন তৈরির প্রকল্পগুলো শুরু করে দিতে সক্রিয় হচ্ছে মোদি সরকার। প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবেলা করার মতো যথেষ্ট রসদ রাখাইন প্রদেশে রয়েছে কিনা, সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।