বিদেশ ভ্রমণে সতর্কতা: হাতকড়া পরাতে পারে অস্বাভাবিক কিছু আইন

সম্প্রতি ব্রিটিশ একজন ছাত্র ম্যাথিউ হেজেসকে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে সংযুক্ত আরব আমিরাতে কারাবাস করতে হয়েছে।

সেদেশে বেড়াতে যাওয়া এই ছাত্রকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে হাজতে পাঠায় এবং পরে ব্রিটিশ সরকারের ব্যাপক হস্তক্ষেপের পর ওই ছাত্রকে প্রেসিডেন্ট ক্ষমাপ্রদর্শন করেন এবং সে জেল থেকে মু্ক্তি পায়।

এখন ব্রিটেনের আরেকটি পরিবার জানিয়েছে, তাদের পরিবারের ১৯ বছর বয়স্ক এক সদস্যকে গুপ্তচরবৃত্তির দায়ে মিশরে আটক করা হয়েছে।

এ দুটি ঘটনা যদিও বেড়াতে গিয়ে আইনভাঙ্গার বা সাজা খাটার চরম দুটি দৃষ্টান্ত, কিন্তু যারা বিদেশে বেড়াতে যায়, বলা হচ্ছে তাদের জন্য স্থানীয় আইন কানুন এবং আচার সম্পর্কে জানা খুবই জরুরি।

প্রসঙ্গত, ব্রিটেনের পররাষ্ট্র দপ্তর এ বছরের গোড়ার দিকে ব্রিটেন থেকে যারা বিদেশ বেড়াতে যায় তাদের পরামর্শ দিয়েছে কোনো দেশ ভ্রমণের আগে সে দেশ সম্পর্কে যথাযথ গবেষণা করে যেতে।

তাদের পরামর্শ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিখ্যাত ব্যক্তিরা যখন বেড়াতে গিয়ে দারুণ আকর্ষণীয় সব ছবি তুলে বিভিন্ন মাধ্যমে পোস্ট করেন, তখন অনেক মানুষই ওইসব আকর্ষণীয় জায়গায় বেড়াতে যেতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন।

কাজেই বিদেশে গিয়ে ঝামেলায় যাতে না পড়েন, নিরাপদে থাকতে পারেন, তার জন্য বিবিসি তৈরি করেছে এই পরামর্শগুলো।

থাইল্যাণ্ডে গিয়ে টাকার ওপর পাড়া দেবেন না

থাইল্যাণ্ডে রাজার ছবি খুবই গুরুত্বপূর্ণ
থাইল্যাণ্ডে রাজতন্ত্রকে অপমান করার বিরুদ্ধে যে আইন রয়েছে তা খুবই পুরোন এবং বিশ্বের অন্যতম সবচেয়ে কঠোর আইন।

এই আইন অনুযায়ী থাই রাজপরিবারের কারো ছবিকে অপমান করা গুরুতর অপরাধ।

যেহেতু ব্যাঙ্কনোটের ওপর রাজার ছবি রয়েছে, তাই থাই নোট পা দিয়ে মাড়ালে বা কারো পায়ের তলায় পড়লে আপনাকে সোজা হাজতে পাঠানো হবে।

চুয়িং গাম নিষিদ্ধ

চুয়িং গামের কারণে জেল খাটতে পানে
থাইল্যাণ্ডে মেঝেতে চুয়িং গাম ছুঁড়ে ফেলা অপরাধ।

এ অপরাধের সাজা ৪০০ পাউণ্ড সমমূল্যের জরিমানা এবং অনাদায়ে সম্ভবত কারাবাস।

চুয়িং গাম নিয়ে সিঙ্গাপুরেও রয়েছে কড়া আইন। সেখানে ব্যতিক্রম শুধু মাড়ির চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত গাম অথবা ধূমপান বন্ধ করার জন্য চিবানোর গাম। এই দুই ধরনের গাম ছাড়া সিঙ্গাপুরে কোনধরনের চুয়িং গাম কেনাবেচা নিষিদ্ধ।

শহরে সাঁতারের পোশাক নিষিদ্ধ

স্পেনের বার্সেলোনা শহরে সমুদ্র সৈকতের বাইরে জনসমক্ষে সাঁতারের স্বল্পবাস পরে ঘুরে বেড়ানো আইনত নিষিদ্ধ করা হয়েছে ২০১১ সালে।

শহরের বিভিন্ন স্থানে বিদেশি পর্যটকরা সাঁতার কাটার স্বল্প বাস পরে ঘুরে বেড়াচ্ছে এ নিয়ে স্থানীয় মানুষ প্রচারাভিযান চালানোর পর এই আইন চালু করা হয়েছিল।

কাজেই অর্ধ-নগ্ন হয়ে কেউ ঘুরে বেড়ালে তাকে প্রায় ১০০ পাউণ্ড সমমূল্যের জরিমানা দিতে হবে।

সমুদ্রে প্রস্রাব করবেন না

পর্তুগালে সাগরে প্রস্রাব করবেন না। এটা আইন বিরুদ্ধ।

যদিও সমুদ্রের পানিতে থাকা অবস্থায় কেউ প্রস্রাব করলে তা কীভাবে ধরা যাবে এবং কীভাবে তার বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগ করা যাবে তা স্পষ্ট নয়।

তবে প্রস্রাবের জন্য টয়লেট ব্যবহার করাই আইনের ফাঁদে না পড়ার শ্রেষ্ঠ উপায়।

কীধরনের ওষুধ আপনার সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছেন?
উত্তেজক ওষুধের বিরুদ্ধে জাপানে আইন অত্যন্ত কঠোর। ফলে ঠাণ্ডা লাগার কারণে যেসব ওষুধ নাক বা মুখ দিয়ে টেনে ভেতরে নিতে হয় অর্থাৎ ”ইনহেল” করতে হয়, সেধরনের ওষুধ নিয়ে জাপানে খুব সতর্ক থাকা দরকার।

জাপানে ঢোকার সময় এধরনের ওষুধ সঙ্গে থাকলে সাবধান। এর ব্যবহার নিয়ে কোনরকম সন্দেহ হলে আপনাকে আটকানো হতে পারে এবং ওষুধ জব্দ করা হতে পারে।

সাম্প্রতিক সমীক্ষায় দেখা গেছে স্পেন, সংযুক্ত আরব আমীরাত, ফ্রান্স, থাইল্যাণ্ড এবং আমেরিকা – এই পাঁচটি দেশ সম্পর্কে ব্রিটিশ সরকার সম্প্রতি পরামর্শ জারি করেছে। কারণ ২০১৬ থেকে ২০১৭র এপ্রিল পর্যন্ত এক বছরে আইনের জাঁতাকলে পড়ে গ্রেপ্তার হয়েছে ব্রিটেনের ৮২৯জন।

আলােকিত সাতকানিয়া/এইচএম