৫০ বছর পর এমন শীত নামলো, ৬ জনের মৃত্যু

বয়ে যাওয়া উত্তরের হিমেল হাওয়া আর ঘন কুয়াশায় কাঁপছে দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়। হাড় কাঁপানো ঠাণ্ডায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। ৫০ বছর পর দেশে সর্বনিম্ন তাপমাত্রার নতুন রেকর্ড হয়েছে আজ।

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় আজ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। গত এক সপ্তাহের মধ্যে তাপমাত্রা হ্রসের নতুন রেকর্ড এটি।বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলের অবস্থা খুবই ভয়াবহ। টানা শৈত্য প্রবাহে গত কয়েক দিনে উত্তরাঞ্চলের জেলা কুড়িগ্রামে মোট ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ মিজানুর রহমান সোমবার আরটিভি অনলাইনকে  এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, এর আগে ১৯৬৮ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি শ্রীমঙ্গলে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২০১৩ সালের ১১ জানুয়ারি সৈয়দপুরের তাপমাত্রা ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমেছিল, কিন্তু সম্প্রতি অতীতে বাংলাদেশের কোথাও তাপমাত্রা এত নিচে নামেনি।

তিনি আরো বলেন, সোমবার সারা দেশে রাত ও দিনের তাপমাত্রা মোটামুটি অপরিবর্তিত থাকবে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় তাপমাত্রায় সামান্য পরিবর্তন হতে পারে। আর এ সপ্তাহের শেষ দিকে রাতের তাপমাত্রা বেড়ে শীতের প্রকোপ কিছুটা কমে আসতে পারে।

গেলো ৪ জানুয়ারি থেকে দেশের ছয় বিভাগের ওপর দিয়ে এই শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। শুরুতে এর মাত্রা মৃদু (৮-১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) থেকে মাঝারি (৬-৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) হলেও শনিবার রাজশাহী ও চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে আসে।

আবহাওয়া অফিস বলছে, রাজশাহী, পাবনা, দিনাজপুর ও কুষ্টিয়া অঞ্চলের ওপর দিয়ে এখন তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আর শ্রীমঙ্গল ও সীতাকুণ্ড অঞ্চলসহ ঢাকা, ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগ এবং রাজশাহী, রংপুর খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ।

এদিকে, রবিবার কুড়িগ্রামে আধুনিক সদর হাসপাতালে এক নবজাতক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। তবে তার পরিচয় জানা যায়নি। রাজারহাট উপজেলায় মারা গেছেন ৩ জন। মৃতদের মধ্যে গত শুক্রবার সকালে নয়ন মনি ও বৃহস্পতিবার মীম সদর হাসপাতালে মারা যান। বাকি ৩ জনকে রাত ১০টা থেকে সাড়ে ১২টার মধ্যে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় বলে জানিয়েছেন কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. জাহাঙ্গির আলম।

এদিকে, শীতজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত শিশুদের ভিড় বেড়েছে উত্তরের জেলাগুলোর হাসপাতালে। পাবনা সদর হাসপাতালে শতাধিক শিশু ভর্তি হয়েছে নিউমোনিয়া, ব্রঙ্ককাইটিস ও কোল্ড ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে।