স্টিফেন হকিং সম্পর্কে জানা অজানা কিছু কথা

জন্মেছিলেন ১৯৪২ সালের ৪ জানুয়ারি, না ফেরার দেশে চলে গেলেন ২০১৮ সালের ১৪ মার্চ। বিপুল জ্ঞান, প্রতিভা, প্রজ্ঞা ও বিজ্ঞানমনষ্কতার জোরে পৃথিবী থেকেই জয় করেছিলেন তারার দেশ। দেহান্তের পর আবার তারার দেশেই চলে গেলেন স্টিফেন হকিং। আসুন জেনে নেই আলবার্ট আইনস্টাইনের পর বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী পদার্থবিদ সম্পর্কে জানা অজানা নানা তথ্য।

১. গ্যালিলিওর মৃত্যুর ঠিক তিনশ’ বছর পর জন্মগ্রহণ করেছিলেন হকিং। আর মারা গেলেন আইনস্টাইনের জন্মদিনের দিনে।

২. যখন তার বয়স ছিল নয় বছর তখন হকিং ছিলেন ক্লাসের সবচেয়ে খারাপ ছাত্র। অর্থাৎ মেধাক্রমের দিক থেকে সবার পেছনে।

৩. যদিও পরীক্ষায় কম নাম্বার পেতেন তবুও তাঁর বুদ্ধির তীব্রতায় শিক্ষকদের কাছে ছিলেন অত্যন্ত প্রিয়। বিজ্ঞান সম্পর্কে আগ্রহের কারণে শিক্ষক আর বন্ধুরা আদর করে ডাকতেন আইনস্টাইন।

৪. অক্সফোর্ডে ভর্তির আগে পছন্দ করতেন নৌকা চালাতে ও ঘোড়া দাবড়িয়ে বেড়াতে।

৫. ১৯৬৫ সালে জেইন ওয়াইল্ডকে বিয়ে করেন হকিং। তাদের সংসারে তিনটি সন্তান রয়েছে। ৩০ বছরের বৈবাহিক জীবন শেষ হয় বিবাহ বিচ্ছেদের মাধ্যমে। এরপর তিনি আবারও বিয়ে করেন তার সাবেক নার্স এলেইন ম্যাসনকে। তবে এ সম্পর্কটিও ভেঙ্গে যায়।

৬. ডাক্তাররা ১৯৬৪ সালেই ঘোষণা করেছিলেন তিনি আর বড়জোর দুই-তিন বছর বাঁচবেন। কিন্তু তাদের মুখে চুনকালি মেখে তিনি বেঁচে ছিলেন ২০১৮ সাল অবধি।

৭. ১৯৭৪ সালে মাত্র ৩২ বছর বয়সে তিনি ব্রিটেনের সবচেয়ে সম্মানজনক রয়েল সোসাইটি অব সায়েন্সের কনিষ্ঠতম ফেলো হন।

৮. টেলিভিশনের পর্দায় হকিংকে দেখা যেত মাঝে মাঝেই। তিনি প্রায়ই তার ভয়েস সিনথেসাইজার দিয়ে বলা কণ্ঠে ক্যামিও হিসেবে উপস্থিত হয়েছেন ‘দ্য সিম্পসনস’, ‘দ্য বিগ ব্যাংগ থিওরি’ ও ‘স্টার ট্রেক: দ্য নেক্সট জেনারেশন’ নামের জনপ্রিয় আমেরিকান সিটকম গুলোতে। এছাড়া আমেরিকার বিখ্যাত টকশোসহ বেশ কিছু ডকুমেন্টারিতে অভিনয় করেছেন তিনি।

৯. ২০০৭ সালে স্টিফেন হকিং তার মেয়ে লুসি হকিং এর সঙ্গে মিলে লিখেছিলেন ছোটদের বই ‘জর্জস সিক্রেট কি টু দ্য ইউনিভার্স’। যা জর্জ নামের ছোট বালকের কাহিনী। কিন্তু সেখানে রয়েছে ব্ল্যাকহোল, বিগ ব্যাংগ থিওরিসহ নানা বৈজ্ঞানিক ধারণার সহজ বিশ্লেষণ।

১০. ২০১৬ সালে ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলেজেন্স রিসার্চ সেন্টারের উদ্বোধনকালে হকিং বলেন, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স সম্ভবত মানব সভ্যতার ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন, এর মাধ্যমে সারা পৃথিবী থেকে রোগ এবং দারিদ্র্য দূর করা সম্ভব হবে। তবে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয় মারণাস্ত্র ও দরিদ্র মানুষকে ঠকানোর নতুন পদ্ধতিও তৈরি হতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন।

১১. তিনি যে মটর নিউরন রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রায় অর্ধশতাব্দী ধরে হুইলচেয়ারে বসা ছিলেন, সেই দুরারোগ্য ব্যাধিটির নাম অ্যামিওট্রফিক ল্যাটারাল স্লেরোসিস।

১২. ২০১৪ সালে স্টিফেন হকিং ও তার প্রথম স্ত্রী জেইন ওয়াইল্ডের প্রেমকাহিনী নিয়ে বানানো হয় চলচ্চিত্র ‘দ্য থিওরি অব এভরিথিং’। তার চরিত্রে অভিনয় করা ব্রিটিশ অভিনেতা এডি রেডমেইন ২০১৪ সালে সেরা অভিনেতা হিসেবে অস্কার জেতেন। সিনেমাটির উদ্বোধনী প্রদর্শনীতে উপস্থিত ছিলেন স্টিফেন হকিং।

১৩. ২০০৭ সালে তিনি পৃথিবীর প্রথম প্যারালাইজড ব্যক্তি হিসেবে ‘জিরো গ্র্যাভিটি’তে ভেসেছিলেন। নাসার কেনেডি ফ্লাইট স্টেশনের একটি বিশেষ বিমানে চড়ে তিনি এ অভিজ্ঞতা অর্জন করেছিলেন।