সিরিজ জয়ের মিশন আজ

প্রথম ম্যাচে হেসে-খেলেই সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। আজ ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে দ্বিতীয় জয় দিয়ে সিরিজ নিশ্চিত করতে চায় বাংলাদেশ। আজ জিতলেই এক বছরে তিনটি ওয়ানডে সিরিজ জয়ের উল্লাসে মাতবে বাংলাদেশ। গত জুলাইয়ে উইন্ডিজ সফরে স্বাগতিকদের বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজ জয়ের পর ঘরের মাঠে অক্টোবরে জিম্বাবুয়েকে ৩-০ তে বিধ্বস্ত করেছিল বাংলাদেশ। ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে মিরপুর শেরে-বাংলা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত প্রথম ম্যাচ জয়ী টাইগাররা সে ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে বদ্ধপরিকর। পক্ষান্তরে একই ভেন্যুতে দুপুর একটায় শুরু হওয়া ম্যাচ জিতে সিরিজে সমতা আনতে মরিয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করে ওয়ানডে লড়াইয়ে নামে উজ্জীবিত বাংলাদেশ। বোলারদের নৈপুণ্যে সিরিজের প্রথম ম্যাচেই বাজিমাত করে টাইগাররা। ৫ উইকেটে ম্যাচ জিতে নেয় স্বাগতিকরা। বাংলাদেশি বোলিং তোপে ৯ উইকেটে মাত্র ১৯৫ রান পর্যন্ত যেতে সক্ষম হয় সফরকারীরা। ক্যারিবীয়দের বড় সংগ্রহে প্রধান বাধা হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। ১০ ওভার বল করে মাত্র ৩০ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন তিনি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজের ২শতম ম্যাচে বাংলাদেশের জয় ও সেরা খেলোয়াড়ের স্বাদ পান অধিনায়ক মাশরাফি। দলের জয়ের পেছনে ভূমিকা রেখে ম্যাচসেরা হতে পেরে খুশী মাশরাফি। তিনি বলেন, ‘আসলে ওই রকম কিছু মনে হচ্ছে না। তবে অবশ্যই ম্যাচসেরা হতে পারলে ভালো লাগে। সেটি খুবই স্বাভাবিক। বিশেষ করে প্রথম ম্যাচটা যখন জিততে পেরেছি।’ পাশাপাশি নিজ দলের বোলারদের কৃতিত্বও দেন মাশরাফি, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজ ভালো করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু যখনই চেষ্টা করেছে, তখনই আউট হয়েছে। বোলারদের তাই কৃতিত্ব দিতে হয়। সহজে ম্যাচ জিতলেও কিছু ভুল চোখে পড়েছে মাশরাফির। এ ব্যাপারে ম্যাশ বলেন, ‘মিরপুরের লো-স্কোরিং ম্যাচগুলো এমনই হয়। আমার মনে হয়, মুশফিক খুব ভালো ব্যাটিং করেছে। লিটনও ভালো করেছে। সাকিবের ইনিংসটি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ফিল্ডিং-এ আমাদের কয়েকটি ক্যাচ পড়েছে। ব্যাটিং-এ হয়তো ৫ উইকেটের জায়গায় ৩ উইকেট পড়লে ভালো হতো। যেহেতু রানের চাপ কম ছিল।’ তাই দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ভুলগুলো শুধরে সিরিজ জয় নিশ্চিত করতে চায় বাংলাদেশ। একইসাথে সতীর্থদের সতর্ক করে দিয়ে মাশরাফি বলেন, ঘুরে দাঁড়ানোর সামর্থ্য আছে অতিথিদের। তাই দ্বিতীয় ম্যাচে সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। এদিকে আজ মিরপুরের উইকেটেও থাকবে না খুব বদল। বাংলাদেশ দল তাই এ ম্যাচেও হয়তো দলে আনবে না কোন পরিবর্তন। তিন পেসার আর দুই স্পিনার হবে আক্রমণের অস্ত্র। ব্যাটিংও থাকবে একই। তাছাড়া জয়ী দলের সমন্বয় ভাঙার অহেতুক ঝুঁকি নেবে কেন টিম ম্যানেজমেন্ট। প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে মাশরাফি হ্যামস্ট্রিংয়ে ব্যথা অনুভব করেন। তবে সিরিজ নিশ্চিত করার ম্যাচে তাকে বিশ্রাম দেবে না টিম ম্যানেজমেন্ট। চার ওপেনারকে বিভিন্নভাবে সেট করে মাঠে নামায় বাংলাদেশ দল। দ্বিতীয় ম্যাচেও দলে থাকবেন তারা। এক ম্যাচ জিতে আত্মতুষ্টির সুযোগ নেই মাশরাফিদের। কারণটা ওয়েস্ট ইন্ডিজ অলরাউন্ডার চেজের কথায় পরিষ্কার, ‘সিরিজ শেষ মোটেও বলবো না। আমরা দারুণভাবে সিরিজে ফিরতে যাচ্ছি।’ ওয়েস্ট ইন্ডিজের অলরাউন্ডার রোস্টন চেজ বলেন, ‘আমরা উইকেটের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারিনি। উইকেট কিছুটা মন্থর ছিল। শটস খেলা কঠিন ছিল। আমার ধারণা আমাদের ব্যাটসম্যানরা পিচের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারেনি। মাঝের ওভারগুলোতে আমাদের ব্যাটসম্যানরা ভালো রান তুলতে পারেনি। আশা করি পরের ম্যাচে এগুলো শুধরে নিবে।’ আজ দ্বিতীয় ওয়ানডের পর ১৪ ডিসেম্বর সিরিজের শেষ ওয়ানডে হবে সিলেটে। এ ছাড়া তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ হবে যথাক্রমে ১৭, ২০ ও ২২ ডিসেম্বর। প্রথম টি-টোয়েন্টি সিলেটে, বাকি দুটি হবে ঢাকায়।
বাংলাদেশ দল : মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক), সাকিব আল হাসান (সহ-অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েস, সৌম্য সরকার, লিটন কুমার দাস, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, রুবেল হোসেন, মুস্তাফিজুর রহমান, মেহেদি হাসান মিরাজ, নাজমুল ইসলাম অপু, মোহাম্মদ মিথুন, সাইফ উদ্দিন, আবু হায়দার ও আরিফুল হক।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল : রোভম্যান পাওয়েল (অধিনায়ক), মারলন স্যামুয়েলস, ড্যারেন ব্রাাভো, রোস্টন চেজ, শাই হোপ, দেবেন্দ্র বিশু, চন্দরপল হেমরাজ, শিমরন হেটমায়ার, কেমো পল, কাইরন পাওয়েল, ফ্যাবিয়ান অ্যালেন, কার্লোস ব্রাফেট, কেমার রোচ, সুনীল এমব্রিস ও ওশানে টমাস।