সাতকানিয়ার ৬ ইউনিয়ন এবং চন্দনাইশের দোহাজারী ও ধোপাছড়িকে নিয়ে নতুন থানা ‘দোহাজারী–সাঙ্গু’ নামকরণের পাঁয়তারার প্রতিবাদে গত শনিবার বিকালে সাতকানিয়ার কেরানীহাট হক টাওয়ার চত্বরে উত্তর সাতকানিয়ার ৬ ইউনিয়নের চেয়ারম্যানগণ এক সমাবেশের আয়োজন করেন।
এতে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন, সাতকানিয়া উপজেলা আ. লীগের সভাপতি এম.এ মোতালেব সিআইপি, সাধারণ সম্পাদক কুতুব উদ্দীন চৌধুরী, সাতকানিয়া পৌরসভা মেয়র মোহাম্মদ জোবায়ের।
এম.এ মোতালেব তাঁর বক্তব্যে বলেন, সাতকানিয়া যেহেতু বড় থানা সেজন্য জনগণের প্রশাসনিক ও বিভিন্ন সুযোগ–সুবিধা অবারিত হওয়ার জন্য এ থানা বিভক্ত হওয়া উচিৎ। দেশের অন্যান্য স্থানেও বড় থানাগুলোকে বিভক্ত করা
হয়েছে। নতুন থানার প্রস্তাবে চন্দনাইশের দোহাজারী–ধোপাছড়িকে যুক্ত করলে ৬ ইউনিয়নের অধিবাসীগণ প্রশাসনিকভাবে অবজ্ঞা ও বিভিন্নভাবে বৈষম্যের শিকার হবে। উপজেলা এক থাকবে শুধু থানাই আলাদা হবে। এজন্য ৬ ইউনিয়নবাসীর দাবি যৌক্তিক বলে মনে করি। জননেত্রী শেখ হাসিনা সবসময় জনগণের মতামতকে প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। ৬ ইউনিয়নবাসীর প্রতি সদয় হয়ে স্থানীয় সাংসদকেও তাদের দাবির প্রতি একাত্মতা জানিয়ে তাদের প্রশাসনিক সহায়তা করার অনুরোধ করছি। কেঁওচিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনির আহমদের সভাপতিত্বে ও উপজেলা
ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক আবু ছালেহ শানের সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন উত্তর সাতকানিয়া থানা বাস্তবায়ন কমিটির অন্যতম উদ্যোক্তা ইঞ্জিনিয়ার আমানুর রশিদ হিরু, চেয়ারম্যান এম. ইলিয়াছ চৌধুরী, তাপস কান্তি দত্ত, আ.ফ.ম মাহবুবুল হক সিকদার, হাফেজ আহমদ, উপজেলা আ. লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সালাহউদ্দীন শাহরিয়ার চৌধুরী, কেরানীহাট ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সভাপতি মো. নুরুন্নবী, সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম ও ব্যবসায়ী রবিউল হাসান খোকন, ছাত্রলীগ নেতা মোহাম্মদ আলী, আমিনুল ইসলাম আমিন প্রমুখ। এছাড়া ৬ ইউনিয়নের আওয়ামীলীগ, বিএনপি ও এলডিপি ও তাদের অঙ্গসংগঠনের নেতা–কর্মীসহ সর্বস্তরের জনগণ অংশ গ্রহণ করেন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ উত্তর সাতকানিয়াবাসী প্রশাসনিক ও বিভিন্নভাবে বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছে। উত্তর সাতকানিয়ার ৬ ইউনিয়ন বাসীর দীর্ঘদিনের দাবি এ ইউনিয়নগুলো নিয়ে নতুন একটি থানা হোক। বিভিন্ন জটিলতার কারণে তা সম্ভব হয়ে উঠেনি। অনেক কাঠ–খড় পুরিয়ে নতুন থানার প্রস্তাব আসে। এতে একটি মহল চন্দনাইশের ২টি ইউনিয়নকে যুক্ত করে ‘দোহাজারী–সাঙ্গু’ থানা করার পাঁয়তারা করছে। বক্তারা বলেন, যদি নতুন থানা গঠন করতেই হয়, তাহলে সাতকানিয়া ৬ ইউনিয়ন নিয়ে উত্তর সাতকানিয়া নামে আলাদা থানা গঠন করতে হবে। না হলে, তারা বর্তমানে সাতকানিয়া থানার অধিবাসী হিসেবেই বহাল থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। অন্যথায় ৬ ইউনিয়নবাসী দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
সাতকানিয়া উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সাতকানিয়ার পুরানগড়, কেঁওচিয়া, বাজালিয়া, খাগরিয়া, কালিয়াইশ ও ধর্মপুর এবং চন্দনাইশের দোহাজারী ও ধোপাছড়ি নিয়ে ‘দোহাজারী–সাঙ্গু’ থানা নামে নতুন একটি প্রশাসনিক থানা স্থাপনের কাজ শুরু হয়।
অন্যদিকে, বিষয়টি জানতে পেরে ক্ষোভে ফুঁসে উঠে ৬ ইউনিয়নের জনসাধারণ। নতুন থানার প্রস্তাব পুলিশ সদর দপ্তর থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে যাওয়ার পর দোহাজারী–সাঙ্গু থানা নামকরণের বিষয়টি জানতে পারেন পুরানগড়ের বাসিন্দা ইঞ্জিনিয়ার আমানুর রশিদ হিরুসহ ৬ ইউনিয়নের চেয়ারম্যানগণ। এর পরই তাঁরা ঢাকায় গিয়ে আইজিপি ও স্বরাষ্ট্র সচিবের সাথে দেখা করেন। তখন স্বরাষ্ট্রসচিব মোস্তফা কামাল উদ্দীন প্রস্তাবিত থানার প্রস্তাব স্থগিত করার মৌখিক আদেশ দেন এবং নতুন করে প্রস্তাব পাঠাতে অনুরোধ জানান। খবর দৈনিক পূর্বকোণ