চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায় যৌতুকের জন্য রোকেয়া বেগম (২২) নামে এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধ করে খুনের অভিযোগ উঠেছে।
শুক্রবার (২০ এপ্রিল) রাতে সাতকানিয়া উপজেলার এওচিয়া ইউনিয়নের পূর্ব চূড়ামনি এলাকায় একটি বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত রোকেয়া বেগম একই এলাকার পারভেজের স্ত্রী। এ ঘটনায় স্বামী পলাতক রয়েছেন।
ওই গৃহবধূর ভাই মহিউদ্দিন বাদি হয়ে স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ির বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন জানিয়ে সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল হোসেন বলেন, ‘ আমরা খবর পেয়ে চূড়ামনি গ্রাম থেকে এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করেছি। ওই গৃহবধূর গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। হত্যা নাকি আত্মহত্যা তা এখনো সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর তা জানতে পারব।
মামলায় যৌতুকের দাবিতে এ গৃহবধূকে খুন করার কথা উল্লেখ রয়েছে বলে জানান, ওসি মো. রফিকুল হোসেন।
নিহতের বড় ভাই মো. মহিউদ্দিন জানান, তিন মাস আগে তার বোনের সাথে এওচিয়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব চুড়ামনি এলাকার বাইট্যা সৈয়দ আহমদের বাড়ির মো. সোলাইমানের দিনমজুর ছেলে মো. পারভেজের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের এক সপ্তাহ যেতে না যেতেই স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন তার বোনকে যৌতুকের জন্য চাপ দিতে থাকে। এ বিষয় নিয়ে বিভিন্ন সময় তারা আমার বোনকে মারধর করে।
মহিউদ্দিন বলেন, গতকাল দুপুর ২টা থেকে তারা আমার বোনকে আবারো যৌতুকের জন্য মারধর শুরু করে। মারধরের এক পর্যায়ে স্বামী পারভেজ আমার মায়ের কাছে ফোন করে বলেছে আমার বোন কাপড় চোপড় নিয়ে ঘর ছেড়ে চলে যাচ্ছে। তারা আটকিয়ে রেখেছে। আমার মাকে সেখানে যেতে বলে। এর কিছুক্ষণ পর পারভেজের মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। তখন সন্দেহ হওয়ায় আমার মা, বাবা ও বড় আম্মা বোনের শ্বশুর বাড়িতে যায়। সেখানে গিয়ে দেখতে পায় আমার বোনকে মৃত অবস্থায় ফেলে রেখে সবাই বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছে। পরে আমরা বিষয়টি পুলিশকে জানায়।’ মহিউদ্দিন আরও বলেন, ‘আমার বোনের গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মনে হচ্ছে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে।’
উপজেলার এওচিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মানিক বলেন, মেয়েটি মারা গেছে এটা সত্য। এটি হত্যা না কি আত্মহত্যা এটা বলতে পারছি না।
সাতকানিয়া থানার এসআই কাজী গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘খবর পেয়ে রাতে গৃহবধূর শ্বশুর বাড়ির ঘরের মেঝে থেকে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি। নিহতের গলায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। যৌতুকের জন্য মারধর করে মেয়েটিকে মেরে ফেলছে এটিই ধারণা করছি।’