বাংলাদেশ ক্রিকেটের প্রাণ বলা চলে তাকে। ক্রিকেট বিশ্বে তো পৌঁছে গেছেন অন্য এক উচ্চতায়। বিশ্ব ক্রিকেটে নিজেকে দিয়েও তো দেশের মান তুলে ধরেছিলেন বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশ ক্রিকেটে সাকিবের অবদান যে অতুলনীয়। ক্যারিয়ারে নিজেকে জ্বালিয়ে আলো ছড়িয়েছেন দেশের হয়ে।
প্রথম বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে সব ফরম্যাটে ১ নম্বর অলরাউন্ডার ছিলেন সাকিব আল হাসান। তিন ফরম্যাট মিলিয়ে ৩০০ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার কীর্তি আছে দেশসেরা এই অলরাউন্ডারের। দেশের হয়ে তিন ফরম্যাটে সমানভাবেই আলো ছড়ানোর কীর্তিটা একমাত্র সাকিবেরই।
একদিনের ক্রিকেটে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ উইকেট জুটির অংশীদারও সাকিব। পঞ্চম উইকেট জুটিতে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে করা ২২৪ রানের জুটি আছে ওয়ানডে ক্রিকেট রেকর্ডের তিন নম্বরে। আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ইতিহাসে পঞ্চম উইকেটে জুটিতে এটিই সর্বোচ্চ।
টেস্ট ক্রিকেট খেলা সব দলের বিপক্ষে ৫ উইকেট শিকারের কীর্তিও আছে সাকিবের। দক্ষিণ আফ্রিকার ডেল স্টেইন এবং শ্রীলঙ্কার মুত্তিয়া মুরালিধরন ও রঙ্গনা হেরাথের পর এই কীর্তি গড়েন তিনি।
তৃতীয় অলরাউন্ডার হিসেবে টেস্ট ইতিহাসে এক ম্যাচে ব্যাট হাতে সেঞ্চুরি ও বল হাতে ১০ উইকেট শিকারের কীর্তি আছে সাকিবের। সাকিব এই কীর্তি গড়েছিলেন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। এর আগে ইংল্যান্ডের সাবেক অলরাউন্ডার স্যার ইয়ান বোথাম ভারতের বিপক্ষে এই কীর্তি গড়েন। ভারতের বিপক্ষে একই রেকর্ড আছে পাকিস্তানের ইমরান খানেরও।
ক্যারিয়ারের শুরুটা হয়েছিল ২০০৫ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ দলে ডাক পাওয়ার পর। ভালো পারফরমেন্সের কারণে সেখান থেকে জাতীয় দলের জার্সিতে অভিষেক হয় ২০০৬ সালের ৬ আগস্টে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে ম্যাচ দিয়েই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সূচনা হয় বাঁহাতি এই অলরাউন্ডারের। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একই বছরের নভেম্বরে টি-টোয়েন্টিতে এবং ২০০৭ সালে ভারতের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্ট দিয়ে অভিষেক হয় সাকিব আল হাসানের।
ক্যারিয়ারে ৫১ টেস্টে ব্যাট হাতে তুলেছেন ৩ হাজার ৫৯৪ রান। সর্বোচ্চ ইনিংস খেলেছেন ২১৭ রানের। বল হাতে নিয়েছেন ১৮৮ উইকেট। ওয়ানডেতে ১৮৫ ম্যাচে ৫ হাজার ২৪৩ রান এবং ২৩৫ উইকেট আছে সাকিবের ঝুলিতে। ওয়ানডেতে খেলেছেন ক্যারিয়ার সর্বোচ্চ ১৩৪ রানের ইনিংস। আর টি-টোয়েন্টিতে ৬৩ ম্যাচে ব্যাট হাতে ১ হাজার ২৩৭ রান এবং বল হাতে ৭৫ উইকেট আছে সাকিবের ঝুলিতে।
ক্রিকেট ইতিহাসে পঞ্চম ক্রিকেটার হিসেবে ব্যাট হাতে ৫ হাজার রান এবং বল হাতে ২৫০ এর বেশি উইকেট নেয়ার রেকর্ড আছে সাকিবের। টেস্টে দুই ম্যাচে ১০ উইকেট করে নিয়েছেন বাংলাদেশি এই অলরাউন্ডার। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২০১৪ সালে এবং অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২০১৭ সালে ১০ উইকেট নেয়ার কীর্তি গড়েন সাকিব। দুটি টেস্টেই জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ।
ক্রিকেট ক্যারিয়ারে সাকিব যেমন অসংখ্য কীর্তির দেখা পেয়েছেন, তেমনি সাকিবকে নিয়ে বিতর্কও কম ছিল না। তবে সব বিতর্কের কথা একপাশে রাখলে বাংলাদেশ ক্রিকেটে বিশ্বের অন্যতম এই অলরাউন্ডারে অবদানের কথা মনে রাখতে হবে খুব ভালোভাবেই।
বয়স বেড়েছে সাকিবের আল হাসানের, পা রেখেছেন ৩১ বছরে। আজ দেশসেরা এই অলরাউন্ডারের জন্মদিন।
শুভ জন্মদিন সাকিব আল হাসান।