লোহাগাড়ায় হাসপাতালের খোলা মাঠে সন্তান প্রসব: নবজাতকের মৃত্যু

চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে ঠাঁই না পেয়ে সামনে খোলা মাঠে মরিয়ম বেগম (২৬) নামের এক নারী সন্তান প্রসব করেছেন। মাঠে সন্তান প্রসবের পর পরই নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে।

বুধবার রাত সাড়ে ১০ টায় এ ঘটনা ঘটে। মরিয়ম বেগম (২৬) উপজেলার পুটিবিলার গৌড়স্থান এলাকার দিন মজুর মহরম মিয়ার স্ত্রী।

রোগীর স্বজন ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, মরিয়ম বেগম প্রচন্ত ব্যথা নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন। সে প্রচন্ড ব্যাথায় ছটফট করছিলেন। কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ আবদুল্লাহ আল মামুন তাকে দেখার পর সিনিয়র নার্স ছায়া চৌধুরীর কাছে পাঠান। কিন্তু নার্স ছায়া চৌধুরী তাদের দূর্ব্যবহার করে (এখান থেকে বের হও) বলে জোর করে বের করে দেন। পরে মরিয়ম বেগমের চাচী শ্বাশুড়ি আবিয়া খাঁতুন নিরুপায় হয়ে কান্না করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতাল থেকে বের হতেই প্রসব বেদনায় সামনে মাঠের ওপর বসে পড়েন মরিয়ম। পরে মাঠে সন্তান প্রসবের মিনিট দুয়েক পর শিশুটির দেহ হঠাৎ নিথর হয়ে যায়। তাৎক্ষনিক ভাবে রোগীর স্বজন ও স্থানীয়রা মরিয়ম বেগমকে উপজেলার জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করান।

এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন পথচারী ও এলাকাবাসী। ঘটনার সংবাদ পেয়েই দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন পদুয়া ইউপির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জহির উদ্দিন। তিনি ঘটনাস্থলে এসে নবজাতক শিশুর মাকে লোহাগাড়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করার ব্যবস্হা করে দেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক আবদুল্লাহ আল মামুন অবহেলার বিষয়টি সম্পুন্ন অস্বীকার করে জানান, গর্ভবতী মহিলা হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে আসলে আমি সিনিয়র নার্স ছায়া চৌধুরীর কাছে পাঠায়। পরবর্তীতে তার অবস্হা আশংকাজনক দেখা দিলে তাকে চমেকে রেফার করি।

পদুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো.জহির উদ্দিন জানান, তিনি বিষয়টি শুনে হাসপাতালে ছুটে আসেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পায় মহিলাটি হাসপাতালের মাঠে পড়া অবস্থায় আছে। নবজাতকটি মৃত অবস্থায় দেখতে পায়। সাথে সাথে আমিসহ স্থানীয়রা মিলে লোহাগাড়া জেনারেল হাসপাতালে মহিলাটিকে নিয়ে আসি।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার, পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হানিফের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি মুঠোফোনে সাংবাদিকদের জানান, পদুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন আামাকে ফোন করে ঘটনাটি জানিয়েছেন। এই ঘটনা আমি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো।