নিউজ ডেস্ক : বায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল (অনার্স-মাস্টার্স) মাদ্রাসার ৪২ তম বার্ষিক সভা ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ বৃহস্পতিবার রাহবারে বায়তুশ শরফ ও বায়তুশ শরফ আনজুমনে ইত্তেহাদ বাংলাদেশ এর সভাপতি আল্লামা শায়খ মুহাম্মদ আবদুল হাই নদভী (মা.জি.আ.) সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদের খতিব, আওলাদে রাসুল (সা.) আল্লামা সাইয়্যেদ মুহাম্মদ আনোয়ার হোসাইন তাহের জাবেরী আল মাদানী।
প্রধান আলোচক ছিলেন আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রামের প্রফেসর ড. মাওলানা বি.এম. মফিজুর রহমান আল আজাহারী। আলোচনা পেশ করেন অধ্যক্ষ আবু সালেহ মুহাম্মদ ছলিমুল্লাহ, মজলিসুল ওলামা বাংলাদেশ এর মহাসচিব মাওলানা মামুনুর রশীদ নুরী।। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বায়তুশ শরফ আনজুমনে ইত্তেহাদ বাংলাদেশের সাধারন সম্পাদক হাফেজ মোহাম্মদ আমান উল্লাহ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন অধ্যাপক জামাল উদ্দিন ও মাওলানা ওসমান গণি প্রমুখ
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদের খতিব, আওলাদে রাসুল (সা.) আল্লামা সাইয়্যেদ মুহাম্মদ আনোয়ার হোসাইন তাহের জাবেরী আল মাদানী বলেন, জাতীয় পর্যায়ে তিনবার শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুরস্কারপ্রাপ্ত চট্টগ্রাম মহানগরীর ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল (অনার্স-মাস্টার্স) মাদরাসা নীতি-নৈতিকতা সম্পন্ন আদর্শ জাতি গঠনে অনন্য ভূমিকা রাখছে। ১৯৮২ সালে বায়তুশ শরফের প্রধান রূপকার শাহসুফি আল্লামা আবদুল জব্বার (রহ.) কর্তৃক দ্বীনি ও আধুনিক বিজ্ঞান মনস্ক শিক্ষার মাঝে সমন্বয় সাধন করে গতানুগতিক মাদ্রাসা শিক্ষাকে অধিকতর যুগোপযোগী করার সুমহান লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে এই মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা ছিল অন্যন্য সৃষ্টি।
তাঁর সৃজিত ইলম, আমল, ইখলাছ ও রূহানিয়াতের বর্ণিল কানন বায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল (অনার্স-মাস্টার্স) মাদ্রাসায় সযত্নে তৈরি হয়েছে শত শত ওলামা, মুফতি, মুফাচ্ছির, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, আমলা, লেখক দ্বীনের দায়ী, যারা এখন দেশ-দেশান্তরে স্ব স্ব পরিমন্ডলে ফুলের সুবাস ছড়াচ্ছেন এবং প্রতিষ্ঠানটি পরিচিতি পেয়েছে বাংলাদেশের একটি বিখ্যাত দ্বীনি বিদ্যাপীঠ হিসেবে। আল্লামা সাইয়্যেদ মুহাম্মদ আনোয়ার হোসাইন তাহের জাবেরী আল মাদানী বলেন, আত্মশুদ্ধি ও আধ্যাত্মিকতার অনুশীলন ও চর্চার ক্ষেত্রে বায়তুশ শরফ স্বতন্ত্র মহিমায় ভাস্বর এক ব্যতিক্রমী প্রতিষ্ঠান। তিনি বলেন, বায়তুশ শরফের গ্রহণযোগ্যতা আজ সার্বজনীন।
বায়তুশ শরফের প্রধান রূপকার আল্লামা শাহ আবদুল জব্বার (রাহঃ) তাঁর অসাধারণ প্রজ্ঞা, অতুলনীয় কর্মশক্তি, ব্যক্তিত্ব, বুদ্ধিমত্তা ও চারিত্রিক মাধুর্যতা দ্বারা সমসাময়িক আলেম ওলামাসহ সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা অর্জন করেছিলেন। তিনি বায়তুশ শরফকে দাঁড় করিয়েছেন জাতিভিত্তিক একটি আধ্যাত্মিক ও সেবামূলক বিশাল প্রতিষ্ঠান রূপে।
সভাপতির বক্তব্যে রাহবারে বায়তুশ শরফ আল্লামা শায়খ মুহাম্মদ আবদুল হাই নদভী (মা.জি.আ.) বলেন, আল্লামা শাহ আবদুল জব্বার (রাহঃ) এর অনবদ্য সৃষ্টিকর্মের অন্যতম হচ্ছে, বায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল (অনার্স-মাস্টার্স) মাদ্রাসা। তিনি বলেন, ইলম অর্জনের পাশাপাশি আত্মার পরিশুদ্ধি চর্চা যদি মাদ্রাসা সমূহে কম হয়, তবে এ শিক্ষা ব্যবস্থা অন্তসার শুন্য হয়ে যাবে। আত্মার গভীর থেকে কলুষকে দূর না হলে শুধু পড়াশুনা-ই ব্যর্থ হয়ে যাবে তা নয় , বরং উল্টা তা ক্ষতিকর হবে। তিনি বলেন, একজন আলেমের নীতিহীনতা ইসলামের যে ক্ষতি করে, আর কারো নীতিহীনতা সে ক্ষতি করতে পারে না।
ইলম অর্জনের পাশাপাশি তাক্বওয়া ও আত্মিক পরিশুদ্ধি অর্জন না হলে অর্জিত সে জ্ঞান তাকে ধীরে ধীরে অহংকারী করে তুলবে। তিনি মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের নফসের উপর কর্তৃত্ব হারানোর আগেই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে নিজেকে গড়ে তোলার, সুঅভ্যাস দ্বারা নিজেকে সাজিয়ে তোলার এবং ছাত্রদের প্রতিভা বিকাশে শিক্ষকমণ্ডলীদের এগিয়ে আসার আহবান জানান৷