রক্তশূন্যতাকে খুব বড় কোনও রোগ বলে মনে না হলেও, যে কোন বড় অসুখের শুরু হতে পারে এই রক্তশূন্যতা থেকেই। তাই শুরু থেকেই রক্তশূন্যতাকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত।
একজন পূর্ণবয়স্ক নারীর জন্য রক্তে হিমোগ্লোবিন ১২.১ থেকে ১৫.১ গ্রাম/ডেসিলিটার, পুরুষের রক্তে ১৩.৮ থেকে ১৭.২ গ্রাম/ডেসিলিটার, শিশুদের রক্তে ১১ থেকে ১৬ গ্রাম/ডেসিলিটার থাকা স্বাভাবিক। কারও রক্তে হিমোগ্লোবিন এর চেয়ে কমে গেলে তিনি রক্তশূন্যতায় আক্রান্ত বলেই মনে করা হয়।
রক্তশূন্যতার লক্ষণগুলি সম্পর্কে জেনে নিন;
১) রক্তশূন্যতায় রোগী অল্পতেই হাঁপিয়ে ওঠেন। সামান্য কাজ করলেই ক্লান্ত হয়ে পড়েন।
২) অনেক সময় রোগীর শরীরের বিভিন্ন অংশের ত্বক ফ্যাকাশে হতে থাকে।
৩) আয়রনের অভাবে রক্তশূন্যতা হতে পারে। এই আয়রনের অভাবে অতিরিক্ত চুল ঝরে যেতে শুরু করে।
৪) রক্তশূন্যতায় আক্রান্তকে বিষণ্ণতায় ভুগতে দেখা যায়। সারাক্ষণ দুর্বলতা এবং মাথাব্যথা হওয়ার কারণে রোগীকে বিষণ্ণতা গ্রাস করে।
৫) এ ছাড়াও রক্তশূন্যতার আর একটি উল্লেখযোগ্য লক্ষণ হল, হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া। রক্তশূন্যতার কারণে হৃৎপিণ্ড পর্যাপ্ত পরিমাণে রক্ত দেহে সঞ্চালনের জন্য পাম্প করতে পারে না। ফলে হৃৎস্পন্দন বেড়ে যায়।
এ বার রক্তাল্পতার কারণগুলি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক:—
১) পুষ্টিহীনতা এবং শরীরে আয়রন এবং ফলিক অ্যাসিডের ঘাটতি।
২) দীর্ঘদিন ধরে যারা ব্যথার ওষুধ সেবন করেন, তারাও রক্তশূন্যতায় ভোগেন।
৩) থ্যালাসেমিয়া-সহ কিছু জন্মগত রোগে আক্রান্তরা রক্তশূন্যতায় ভোগেন।
৪) পাকস্থলী ও অন্ত্রের ক্ষত বা আলসারের কারণে ক্রমাগত বমি বা পায়খানার সঙ্গে রক্তক্ষরণ হওয়া, অন্ত্রে কৃমির সংক্রমণ বা অর্শরোগে (পাইলস) রোগীর অতিরিক্ত রক্তপাতের কারণেও রক্তশূন্যতা হতে পারে।
রক্তশূন্যতা প্রতিকারের উপায়:—
শরীরে আয়রনের ঘাটতিজনিত কারণে রক্তাল্পতা হলে আয়রনযুক্ত খাবার খেতে হবে।
রক্তাল্পতায় অনেকে আয়রন ট্যাবলেট খেয়ে থাকেন। তবে ইচ্ছামতো আয়রন ট্যাবলেট না খেয়ে চিকিৎসকের পরামর্শমতো আয়রন খাওয়াই ভাল।
কিছু পুষ্টিকর খাবার আছে যা খাওয়ার মাধ্যমে কোনও ওষুধ ছাড়াই রক্তশূন্যতা দূর করা সম্ভব। যেমন, দুধ, শাক-সবজি, মধু, বিভিন্ন ফল ইত্যাদি। যারা ফল খেতে ভালবাসেন না তারা প্রাণিজ উৎস থেকে পাওয়া আয়রন খুব সহজেই শরীরের কাজে লাগাতে পারেন।