ভুয়া খবর ছড়ালে ভারতে কঠোর সাজার ব্যবস্থা

ভুয়া খবর ও শিশু পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ অ্যাপ ও ওয়েবসাইটগুলোর বিরুদ্ধে সাজা বাড়িয়ে তথ্যপ্রযুক্তি আইন সংশোধনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। প্রস্তাবিত আইনে বিধি লঙ্ঘন করলে অ্যাপ ও ওয়েবসাইটগুলোকে সরিয়ে দেওয়ার কঠোর সাজার ব্যবস্থা রাখা হবে।

আজ বুধবার টাইমস অব ইন্ডিয়া অনলাইনে এ খবর প্রকাশ করা হয়।

খবরে বলা হয়, তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বিশ্বের শীর্ষ পর্যায়ের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ইন্টারনেট প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের বৈঠকের কয়েক দিন পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বৈঠকে প্রতিনিধিরা অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি বেআইনি বিষয়গুলো চিহ্নিত করতে প্রস্তাবিত আইনের ব্যাপারে তাদের মতামত জানান। এই একটি মূল ক্ষেত্রে সরকার ও প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে মতবিরোধ ছিল।

Eprothom Aloনাম প্রকাশ না করার শর্তে সরকারের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেন, আইন ভঙ্গ করলে বা সহায়তা করতে না চাইলে প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতার প্রয়োজন রয়েছে।

আইনে সংশোধন আনার পর তা হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক, গুগল, টুইটার ও টেলিগ্রামের মতো জনপ্রিয় যোগাযোগমাধ্যমের কার্যক্রমে প্রভাব ফেলতে পারে। ভুয়া খবরের উৎস শনাক্ত করা, এনক্রিপশনের সুযোগ পাওয়া (এনক্রিপশন প্রক্রিয়ায় নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষ ছাড়া আর কেউ তথ্যে প্রবেশ করতে পারে না), রাজনীতি ও নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করে এমন বিষয়, শিশু হয়রানি ও প্রতিশোধমূলক পর্নো চিত্র ছড়ানোর ব্যাপারে এসব যোগযোগমাধ্যমের সঙ্গে সরকারের মতবিরোধ ছিল।

আরেক সরকারি কর্মকর্তা জানান, তথ্যপ্রযুক্তি আইনে এখন যেসব শাস্তির বিধান রয়েছে, তা যথেষ্ট নয়। এটা সংশোধনের প্রয়োজন রয়েছে। অনেক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের ব্যাপক আয় রয়েছে, সেই তুলনায় সাজা অনেক কম। ডেটা সুরক্ষা বিলে সাজা আরও বাড়ানোর প্রস্তাব করা হচ্ছে।

পুনিত ভাসিন নামের ভারতের একজন সাইবার আইন বিশেষজ্ঞের মতে, ভুয়া খবর ঠেকানোর প্রবণতা রোধে ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি আইনে খুব কমই ব্যবস্থা রয়েছে। ভারতের এমন কোনো আইন নেই, যার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলোকে এই ইস্যুতে কাজ করতে বলা যায়। একমাত্র ভারতের দণ্ডবিধি অনুসারে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায়। তাদের বিরুদ্ধে বর্তমান তথ্যপ্রযুক্তি আইনে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যায় না। ডেটা স্থানীয়করণসহ ভারতের এ–সংক্রান্ত আইনটিকে আরও কঠোর করা উচিত এবং তা বাস্তবায়নে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন বলে তিনি জানান।

এর আগে গত জুলাই মাসে রাজ্য সভায় আইন ও তথ্যপ্রযুক্তি–বিষয়ক মন্ত্রী রবি শংকর বলেছিলেন, অপরাধ সংঘটন, ঘৃণা ছড়ানো, জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদকে উসকানি দেওয়া এবং অর্থ পাচারে ইন্টারনেটকে মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করতে না দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিতে আইন করা হবে। তিনি আরও বলেছিলেন, ভারতে বিদেশি ইন্টারনেট প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম পরিচালনা নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ওই সব প্রতিষ্ঠানকে ভারতের আইন ও বিচার বিভাগের কাছে দায়বদ্ধ থাকতে হবে।