বিদায় হে বীরাঙ্গনা

এ বছরের মার্চের শেষ দিকে একটু সুস্থ হয়ে শেষবারের মত নিজ বসত ভিটায় এসেছিলেন তিনি। তখন কি যেন বলতে চাইতেন। স্পষ্ট না হলেও স্বজনরা ইশারা ইঙ্গিতে বুঝে নিতেন রমা চৌধুরীর কথাগুলো। তিনি শেষ জীবনে চেয়েছিলেন তার বসতভিটায় ছোট্ট একটি অনাথ আশ্রম গড়ে তুলবেন। যেখানে ঠাঁই হবে সমাজের অসহায় নিপীড়িতদের। যাদের কোলাহল দেখে তিনি ভুলতে পারবেন তার অকালে হারিয়ে যাওয়া তিন সন্তানের বিয়োগ বেদনা। ভুলতে পারবেন ’৭১–এ তার উপর বয়ে যাওয়া নির্মমতার ব্যথা। না তার সেই ইচ্ছা পূরণ হয়নি। তার আগেই তিনি চলে গেলেন না ফেরার দেশে। তার মৃত্যুর পর শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী গতকাল ছেলে দীপংকর টুনুর সমাধির পাশেই তাকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়। এর আগে দুপুর ১টার দিকে বোয়ালখালী উপজেলা শহীদ মিনার চত্বরে ও পরে পোপাদিয়ার গ্রামের বাড়িতে রমা চৌধুরীর মরদেহে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং সর্বস্তরের মানুষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এখানে তাকে রাষ্ট্রীয়ভাবে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। তাকে শেষবারের মত এক নজর দেখার জন্য এলাকাবাসীর ঢল নামে। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ধর্মীয় রীতি অনুসারে ছেলে দীপংকর টুনুর সমাধি পাশে সমাহিত করা হয় এ সংগ্রামী বীরঙ্গনাকে। এ সময় ‘একাত্তরের জননী’ খ্যাত বীরাঙ্গনা রমা চৌধুরীর একমাত্র জীবিত ছেলে জহর চৌধুরী, রমা চৌধুরীর বইয়ের প্রকাশক আলাউদ্দীন খোকন উপস্থিত ছিলেন।