‘মুক্তিযুদ্ধের বিজয়, বীর বাঙালির অহংকার’-এ স্লোগান ধারণ করে গতকাল সোমবার থেকে এম এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেসিয়াম মাঠে শুরু হয়েছে ৩০ তম মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা। স্টেডিয়াম চত্বরে বিজয় শিখা প্রজ্বলন করেন শহীদ মুরিদুল আলমের স্ত্রী জেসমিন আলম। এরপর প্রধান অতিথি হিসেবে বেলুন ও শান্তির কপোত উড়িয়ে সপ্তাহব্যাপী মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা উদ্বোধন করেন সিটি মেয়র ও বিজয় মেলা পরিষদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক আ জ ম নাছির উদ্দীন। মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও শাহাব উদ্দীন মজুমদার এবং আবৃত্তশিল্পী দিলরুবা খানমের সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ঘোষণা পত্র পাঠ করেন পরিষদের মহাসচিব কমান্ডার মোজাফ্ফর আহমদ। স্মৃতিচারণ করেন মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা পরিষদের কো-চেয়ারম্যান নাঈম উদ্দীন চৌধুরী, কো-চেয়ারম্যান কমান্ডার সাহাবউদ্দীন, কো-চেয়ারম্যান শেখ মাহমুদ ইসহাক, কো-চেয়ারম্যান এ কে এম সরোয়ার কামাল দুলু, কো-চেয়ারম্যান এম এন ইসলাম, কো-চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সুনীল সরকার, পরিষদের অর্থ সচিব সাধন চন্দ্র বিশ্বাস, মুক্তিযোদ্ধা খোরশেদ অলম (যুদ্ধাহত), আবদুল লতিফ, নুরউদ্দিন, শহীদুল ইসলাম দুলু, জালাল আহমদ, রবার্ট রোনাল্ড পিন্টু, তপন দস্তিদার, টি এম মাহবুব, চবি অধ্যাপক ড. জিনবোধি ভিক্ষু, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান শরফুদ্দিন চৌধুরী রাজু, নওশাদ মাহমুদ রানা, মাহবুবুর রহমান শিবলু, অধ্যাপিকা সায়রা বানু রৌশনী, সরওয়ার আলম চৌধুরী মনি, সাহেদ মুরাদ সাকু, মিজানুর রহমান সজিব, কামরুল হুদা পাভেল, আবদুল হান্নান, মো. হাছান, মেজবা উদ্দিন আজাদ, রিপন চৌধুরী প্রমুখ। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলা ইউনিট কমান্ড, উপজেলা ও থানা কমান্ডের নেতৃবৃন্দ, সর্বস্তরের মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের লোকজন, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, সংস্কৃতিসেবী এবং পেশাজীবীসহ সর্বস্তরের লোকজন উপস্থিত ছিলেন। জাতীয় পতাকা উত্তোলন, পবিত্র কোরআন, গীতা, ত্রিপিটক ও বাইবেল পাঠের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠান শুরু হয়। স্মৃতিচারণ শেষে মেলার মঞ্চে দলীয় নৃত্য, আবৃত্তি ও একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন ও টিভি-বেতারের শিল্পীবৃন্দ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, ১৯৭১ সালের এই দিনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে এই দেশ হানাদার মুক্ত হয়। জাতির পিতার ডাকে বাংলাদেশের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, ৩০ লক্ষ শহীদ ও ২ লক্ষ মা-বোনের ইজ্জ্বতের বিনিময়ে পাকিস্তানি বর্বর বাহিনীকে পরাজিত করে আমরা পেয়েছি স্বাধীনতার লাল সূর্য স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। কিন্তু এ প্রজন্মের অনেক সন্তান মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানে না বলে তারা বিপথে ধাবিত হচ্ছে। তাদেরকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত করা গেলে আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণ সম্ভব হবে। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশ অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে গেছে। এ সরকারের বিগত ১০ বছর মেয়াদে দেশের প্রত্যেকটি উন্নয়নসূচক আজ দৃশ্যমান। দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হলে আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি ও আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীদের আবারও ভোট দিতে হবে। এজন্য দেশের সকল মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তিসহ সর্বস্তরের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারীদের বিরুদ্ধে সজাগ থাকতে হবে।
আজকের কর্মসূচি : আজ মঙ্গলবার বিকাল ৫টায় মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিনে প্রধান অতিথি থাকবেন সরকারের বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা পরিষদের কো-চেয়ারম্যান কমান্ডার সাহাবউদ্দিন। অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাগনসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে উপস্থিত থাকার জন্য বিজয় মেলা পরিষদের মহাসচিব মোজাফফর আহমদ অনুরোধ জানিয়েছেন।