বাবুর বাসা থেকে আনোয়ারায় সাইক্লোস্টাইল মেশিন

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ একটি জাতীয় অধ্যায়ের শ্রেষ্ঠতম ইতিহাস। সেই ইতিহাসে জড়িয়ে আছে সেদিনের সময়, স্থান কিংবা আড়ালে থেকে যাওয়া হাজারো ঘটনা। তেমনই একটি ঐতিহাসিক দলিল স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র ছাপানো সাইক্লোস্টাইল মেশিন। সেই ঐতিহাসিক নিদর্শনটি দেশ স্বাধীনের পর থেকে আনোয়ারা সরকারি কলেজে সংরক্ষণে রয়েছে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানি শাসকদের হাতে আটক হবার পূর্বে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রটি পাঠিয়ে দেন চট্টগ্রামের স্থানীয় নেতা এম. এ হান্নানের কাছে। সেটি ছাপিয়ে প্রচারের জন্য সিদ্ধান্ত নেন চট্টগ্রামের নেতাকর্মীরা।

সে অনুযায়ী আওয়ামীলীগ নেতা আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর জুপিটার হাউজের বাসায় এম.এ হান্নান, জুহুর আহমেদ, আতাউর রহমান খান কায়ছার, আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু,এস.এম মান্নান, নুরুল আলম চৌধুরী সহ আরও অনেক নেতারা মিলে সারারাত ধরে ঐ সাইক্লোস্টাইল মেশিন দিয়ে ঘোষণাপত্রটি অসংখ্য কপি ছাপানো হয়। তা সকালে শহরের বিভিন্ন আনাচে কানাচে এলাকায় ঘোষণাপত্রটি প্রচার করেন। এরপর দেশ স্বাধীনতা লাভ করার পর সাইক্লোস্টাইল মেশিনটি জুপিটার হাউজে পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়ে যায়। এরপর আনোয়ারায় কলেজ প্রতিষ্ঠিত করে আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু মেশিনটি নিয়ে আনে। এরপর থেকে স্বাধীনতার ঐতিহাসিক নিদর্শনটি এই কলেজে সংরক্ষিত রয়েছে। আনোয়ারা মুক্তিযুদ্ধা কমান্ডার ফজল আহমদ জানান- স্বাধীনতা যুদ্ধের সেই ঐতিহাসিক দলিলটি ইতিহাসের নিদর্শন হিসেবে আনোয়ারায় সংরক্ষিত থাকায় অত্যন্ত আনন্দিত ও গর্ববোধ করি৷ এটি কলেজে সংরক্ষণে থাকলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মরা এটা দেখে সেই ইতিহাস উপলব্ধি করতে পারবে।

আনোয়ারা সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রিদুয়ানুল হক জানান- স্বাধীনতার পরে সাইক্লোস্টাইল মেশিনটি আখতারুজ্জামান চৌধুরীর বাসা থেকে কলেজের জন্য চেয়ে নেন কলেজের তৎকালীন অধ্যক্ষ মোহাম্মদ হোসেন খান। সেটি দিয়ে অনেক সময় কলেজের প্রশ্নপত্র করাসহ নানান কাজে ব্যবহার করা হয়েছে। মুুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের আলোচিত বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণাপত্র প্রচার করার ঐতিহাসিক সেই নিদর্শন সাইক্লোস্টাইল যন্ত্রটি আমাদের আনোয়ারা কলেজে। তাই আমি অত্যন্ত আনন্দিত ও গর্বিত।