আমি যখন ১৯৭৮ সালে ছাত্র রাজনীতি শুরু করি তখন রাস্তায় ঘুরে ঘুরে চট্টগ্রামের অনেক জনসভার মাইকিং করেছিলাম। কলেজ জীবনের সেই মাইকিং থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব দিলেন দলের প্রচার সম্পাদক হিসেবে। প্রচার সম্পাদকের দায়িত্ব দিয়ে হাতে ধরিয়ে দিলেন দলের মাইকটি। এখন আবার তথ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়ে রাষ্ট্রের মাইকটিও তুলে দিলেন আমার হাতে। যে মাইকিং দিয়ে আমার শুরু সে মাইকিং এখনো চলছে। তাই মাইক আমারে আর ছাড়লো না।
গতকাল (রবিবার) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি এসব কথা বলেন।
সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে গণমাধ্যম পূর্ণ স্বাধীনতা পাচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, সত্য সংবাদ প্রকাশে আপনাদের স্বাধীনতা রয়েছে। আপনাদের লেখনির মাধ্যমে উঠে আসে সমাজের অন্যায় অসংগতি। যদি সত্য ঘটনা হয় তাহলে মন্ত্রী ও রাষ্ট্রের বড় কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ হবে। আমি বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ সমর্থন করি, সেটা যার বিরুদ্ধেই হোক না কেন। সমালোচনা, বিতর্ক থাকবে, তবে সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে অবশ্যই তা বস্তুনিষ্ঠ ও পেশাদারিত্ব বজায় রেখে করতে হবে।
অনলাইন গণমাধ্যমের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, অনলাইন গণমাধ্যম এতো হারে বেড়েছে যে, কিছু অপেশাদার কোয়ালিফাইড নয় এমন ব্যক্তি সাংবাদিকতার দোহাই দিয়ে সচিবালয়ে পর্যন্ত ঢুকে পড়ছে। শুধু তাই নয় ব্যক্তিগত স্বার্থ আদায়ের জন্য এরা মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করে কাউকে হেয় প্রতিপন্ন করতেও দ্বিধা করেন না। তাই এদের দৌরাত্ম্য কমিয়ে আনতে অনলাইনকে খুব দ্রুত রেজিস্ট্রেশনের আওতায় আনা হচ্ছে। তবে সব অনলাইন গণমাধ্যম এক নয়। পেশাদার ও কোয়ালিফাইড অনলাইন গণমাধ্যমের সুবাদে আমরা খুব অল্প সময়ে সঠিক সংবাদও পেয়ে থাকি। এসব পেশাদার অনলাইন গণমাধ্যমগুলোর পাঠকও রীতিমতো অবাক করে দেওয়ার মতো। রেজিস্ট্রেশন দেওয়ার সময় পেশাদার ও কোয়ালিফাইড অনলাইনগুলোকেই বেছে নিবো। ইতিমধ্যে কিছু অনলাইন গণমাধ্যমের তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের কাজও করছে তথ্য মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশের গণমাধ্যমকে ঠেলে সাজানো হবে।
সাংবাদিকদের আলোচিত নবম ওয়েজ বোর্ড নিয়ে মন্ত্রী বলেন, নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়নে আমরা বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। ইতোমধ্যে পত্রিকা মালিকদের সংগঠন ‘বাংলাদেশ নিউজ পেপার এসোসিয়েশন ‘ওনার’ এর সাথে আমরা নবম ওয়েজ বোর্ডের বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করেছি। আশাকরি খুব শীঘ্রই আমরা নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন করতে পারবো।
চট্টগ্রাম টেলিভিশন নিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমি শুরুতেই বলেছিলাম চট্টগ্রাম টেলিভিশনকে পূর্ণাঙ্গ টেলিভিশন করবো। আগামী পহেলা বৈশাখ থেকে প্রথম ৯ ঘণ্টার সম্প্রচারে যাবে বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্র। এর কয়েকমাসের মধ্যে সম্প্রচারের সময় বাড়িয়ে করা হবে ১২ ঘণ্টা। আগামী বছরের শুরুতে বিটিভির চট্টগ্রাম কেন্দ্র সম্প্রচার করবে ২৪ ঘণ্টার পূর্নাঙ্গ চ্যানেল হয়ে।
চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধন করেন সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। প্রেসক্লাবের সভাপতি কলিম সরওয়ারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ। এসময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি আবু সুফিয়ান, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি নাজিম উদ্দিন শ্যামল, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শুকলাল দাশ, অর্থ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মিন্টু চৌধুরী, ক্রীড়া সম্পাদক নজরুল ইসলাম ও সাংবাদিক কো-অপারেটিভ সোসাইটির সভাপতি স্বপন মল্লিক প্রমুখ।