সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরে’ স্থানীয়দের চাকরি, নতুন জমি অধিগ্রহণের সময় গ্রাম বাদ দেওয়া ও ডিসি অফিসে না নিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে এসে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে।
বুধবার (৩ এপ্রিল) সকালে মিরসরাইয়ে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব অনুরোধ জানান। মিরসরাই, সীতাকুণ্ড ও ফেনীর তিনটি ইকোনমিক জোন নিয়ে এ শিল্পনগর গড়ে উঠছে।
তিনি বলেন, আমরা গর্বিত বঙ্গবন্ধুর নামে এ শিল্পনগর হয়েছে। আশ্চর্য হয়েছি, ২ বছরে চরাঞ্চলের চেহারা পাল্টে গেছে। আমি চাই ৭০০ একর জমিতে ১ হাজার মানুষের ক্ষতিপূরণ হয়ে যাক। ৬৫০ একর ফসলী জমি অধিগ্রহণের সময় গ্রাম বাদ দেওয়া হোক। ডিসি অফিসে না নিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের এখানে এসে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার অনুরোধ জানাই। বিশেষ অনুরোধ-মিরসরাইয়ের স্থানীয়দের চাকরি দেওয়া।
মিরসরাইয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরের অনুষ্ঠানে অতিথিরা। ছবি: উজ্জ্বল ধরতার বক্তব্যের সূত্র ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মোশাররফ ভাই আপনি মিরসরাইয়ে ইকোনমিক জোন করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। যারা জমি দিয়েছেন তাদের পরিবারের সদস্যরা যেন কাজ পায়। শিল্পের জন্য নতুন করে ফসলী জমি নেওয়া যাবে না। যা নেওয়া হয়েছে যথেষ্ট। আগে সেখানে শিল্প কারখানায় ভরে যাক।
ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের ৬৫টি প্রকল্পের ভিত্তিস্থাপন ও উদ্বোধন করেন। এর মধ্যে ১১টি অর্থনৈতিক অঞ্চলও রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের মূল লক্ষ্য কর্মসংস্থান ও মানুষের জীবনমান উন্নত করা। ডেল্টা প্লান করেছি। সমুদ্রসীমা নির্ধারণ করেছি। এখন এগিয়ে যাওয়ার পালা। সেটি সম্ভব হবে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে।
মিরসরাইয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরের অনুষ্ঠানে অতিথিরা। ছবি: উজ্জ্বল ধরঅনুষ্ঠানে জানানো হয়, শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ৭১ কিলোমিটার দূরে ৩০ হাজার একর জুড়ে গড়ে তোলা হচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর। যেখানে নির্মিত হচ্ছে নিজস্ব পাওয়ার প্ল্যান্ট। ৬ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে এ প্ল্যান্টে। আড়াই হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ শিল্পনগরে সরবরাহ করে বাকিটা জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে।
মিরসরাইয়ে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরে ১০ মিটার উঁচু প্রতিরক্ষা বাঁধ দেওয়া হচ্ছে। ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ শেখ হাসিনা স্মরণী নির্মিত হচ্ছে।
চট্টগ্রামের অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেন। তিনি বলেন, ১২ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ হবে। ৭ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুল মান্নান, জেলা পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনা, বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সাফওয়ান সোবহান, চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম, বিজিএমইএ-এর সাবেক প্রথম সহ-সভাপতি নাসির উদ্দিন চৌধুরী প্রমুখ।