নতুন প্রজন্মের ইন্টারনেট সেবা ফোরজির জন্য গ্রাহককে বাড়তি টাকা গুণতে হচ্ছে। দেশে পরিচালিত মোবাইলফোন অপারেটররা গ্রাহকদের কাছ থেকে এ বাবদ ১০০ থেকে ১১০ টাকা নিচ্ছে। তাদের যুক্তি হলো সিম প্রতিস্থাপনে কর হিসেবে সরকারই এই অর্থ নিচ্ছে।
মোবাইলফোন অপারেটর সূত্রে জানা গেছে, এই সেবা নিতে হলে গ্রাহককে ফোরজি সমর্থন করে এমন হ্যান্ডসেট থাকতে হবে। সঙ্গে ফোরজির জন্য সিম বদলে নিতে হবে।
গ্রামীণফোনের ফোরজি সিমের জন্য নতুন করে দিতে হবে ১১০ টাকা। বাংলালিংক ও রবির জন্য ১০০ টাকা গ্রাহককে গুণতে হবে।
তবে এই তিন অপারেটরই বিশেষ গ্রাহকের কাছ থেকে এই অর্থ নিচ্ছে না। যেমন গ্রামীণফোন তার স্টার গ্রাহকদের, বাংলালিংক তার প্রিয়জন প্যাকেজে ও রবি তার ধন্যবাদ প্যাকেজের সিমে এই অর্থ ছাড় দিচ্ছে। এ গ্রাহকেরা নির্দিষ্ট কোড পাঠিয়ে ফিরতে ক্ষুদেবার্তায় তা জেনে নিতে পারছেন তার সিমটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফোরজিতে প্রতিস্থাপন হয়েছে কিনা?
গ্রামীণফোনের জনসংযোগ বিভাগের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো. মেহেদী হাসান জানান, তারা সিম বদলে নিতে গ্রাহকদের কাছ থেকে কোনো বাড়তি টাকা নিচ্ছেন না। এই অর্থ সরকারই নিচ্ছে। সরকারের পক্ষে গ্রামীণফোন এই টাকা আদায় করছে।
তবে টেলিযোগাযোগ বিশ্লেষকরা বলছেন, সিম বদলে দিতে অপারেটররা নতুন করে যে ফি নিচ্ছে, তা অযৌক্তিক। এই অর্থ নেয়ার পেছনে কারণ নেই। এখানে এক ধরনের বৈষম্যও করা হচ্ছে।
তারা বলছেন, যারা ফোরজির জন্য সিম বদলাচ্ছেন তারা এ বাবদ আগে সরকারকে কর দিয়েছেন। এতে সিমের মালিকানাও পরিবর্তন হচ্ছে না। একই ব্যক্তি শুধু আপগ্রেডশনে যাচ্ছেন। এজন্য বাড়তি টাকা আদায় অযৌক্তিক।
টেলিযোগাযোগ বিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান লার্ন এশিয়ার জ্যেষ্ঠ গবেষক আবু সাইদ খান জানান, সিম বদলের জন্য গ্রাহকদের কাছ থেকে যেভাবে অর্থ নেয়া হচ্ছে, তাতে এক ধরনের শ্রেণি বৈষম্য রয়েছে। যিনি বেশি বেশি খরচ করেন, তাকে ছাড় দেয়া হচ্ছে। আর যিনি কম খরচ করেন, তার কাছ থেকে টাকা আদায় করা হচ্ছে। এটা অযৌক্তিক।
ফোর অপারেটররা যদি টাকা নেয়, তবে সবার কাছ থেকে নেয়া উচিত। কারও কাছ থেকে ফি নেয়া হবে আর কারও কাছ থেকে নেয়া হবে না- সেটা উচিত না।
এ গবেষক বলেন, এ ধরনের বৈষম্যমূলক নীতি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
এ বিষয়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, নির্দিষ্ট গ্রাহককে ছাড় দেয়ার বিষয় আমার জানা ছিল না। এই বৈষম্য সমর্থনযোগ্য নয়। আমি বিটিআরসিকে বিষয়টি বলবো। আর সিম বদলে নিতে যে অর্থ আরোপ করা হয়েছে তা পুনর্বিবেচনার জন্য অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হবে।