ভারতীয় সেনাবাহিনীর এক জওয়ানকে গত শুক্রবার রাজস্থান রাজ্যের জয়সলমির থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্সের (আইএসআই) কাছে ভারতীয় সেনাবাহিনীর অনেক সংবেদনশীল ও গোপনীয় তথ্য পাচার করেছেন তিনি। তা–ও ফেসবুকে আইএসআইয়ের এক নারী গোয়েন্দার প্রেমের ফাঁদে পড়ে!
এ ধরনের গোয়েন্দাবৃত্তিকে ‘হানি-ট্র্যাপিং’ বলা হয়। আইএসআইয়ের নারী গোয়েন্দার হানি ট্র্যাপিংয়ের শিকার ওই জওয়ানের নাম সম্বির সিং (২২)। ২০১৬ সালে তিনি ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। হরিয়ানা রাজ্যের এই বাসিন্দা সেপাই পদমর্যাদায় মোতায়েন ছিলেন পাকিস্তান সীমান্তের কাছে রাজস্থানের ট্যাংক রেজিমেন্টে। রাজস্থান রাজ্যের বিশেষ শাখার (এসএসবির) এক কর্মকর্তা বলেন, সম্বিরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। সেনাবাহিনীর কী কী কৌশলগত তথ্য তিনি ফাঁস করেছেন, তা তদন্ত করে খুঁজে দেখা হচ্ছে।
ভারতের সেনাবাহিনী প্রধান বিপিন রাওয়াত গত বৃহস্পতিবার বলেছেন, ভারতীয় সেনাবাহিনীর জওয়ানদের মধ্যে এখন এ সমস্যা প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে। সূত্রের খবর, আইএসআইয়ের এক নারী গোয়েন্দা ফেসবুকে আনিকা চোপড়া নামে একটি ভুয়া অ্যাকাউন্ট থেকে মাস সাতেক আগে সম্বিরের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তোলেন। ওই নারী গোয়েন্দা নিজেকে ভারতীয় সেনাবাহিনীর জম্মু মেডিকেল শাখার একজন কর্মকর্তা বলে পরিচয় দেন সম্বিরকে। আনিকার প্রোফাইল ছবিতে একটি সবুজ শাড়ি পরা নারীর ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। ফেসবুকে সম্বির ও আনিকার ‘প্রেম’–এর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিভিন্ন অন্তরঙ্গ মেসেজ পাঠিয়ে সম্বিরকে প্রলুব্ধ করেন আনিকা। ভিডিও কলেও কথা হয় তাঁদের। আনিকা সম্বিরের কাছ থেকে তাঁর রেজিমেন্টের বিভিন্ন তথ্য জানতে চান। ট্যাংক, সাঁজোয়াযান ও বিভিন্ন অস্ত্রের ছবি মেসেজে দিতে বলেন। জিজ্ঞাসাবাদে সম্বির এসব স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ভারতীয় পুলিশের ধারণা, আনিকা নামের ওই ফেসবুকের আইডিটি চালানো হয় পাকিস্তানের করাচি থেকে। এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, সম্বিরের মুঠোফোন জব্দ করা হয়েছে। রাজস্থান রাজ্য বিশেষ শাখার (এসএসবি) এসপি রাজেশ মীনা বলেন, নিম্নপদস্থ ওই সেনা কর্মকর্তা গোপন তথ্য জানানোর শর্তে তাঁর অনলাইন ‘প্রেমিকা’র কাছ থেকে বিভিন্ন সময় তাঁর ভাইয়ের অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে অর্থও নিয়েছেন বলে জানা গেছে।