প্রতীক পেয়েই প্রচারণায় সরগরম নগরী ও জেলার বিভিন্ন এলাকা

সোমবার প্রতীক পেয়েই প্রচারণায় নেমেছেন নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। আর গতকাল থেকে প্রার্থীরা শুরু করেছেন আনুষ্ঠানিক প্রচারণা। উৎসবমুখর পরিবেশে শুরু হওয়া প্রচারণায় সরগরম নগরী ও জেলার বিভিন্ন এলাকা। ছিল মিছিল, শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রাগুলোতে মানুষের ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।
আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রচারের শুরুতেই সরগরম নগরী। মাঠে নেমেই ভোটারদের কাছ থেকে সাড়া পাচ্ছেন প্রার্থীরা। মূল সড়ক থেকে পাড়া-মহল্লা সর্বত্রই এখন নির্বাচনী উৎসব চলছে। চারদিকে নির্বাচনী আবহ। আগামী ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচন। সেই হিসেবে হাতে আছে আর ১৮ দিন। মাইকের আওয়াজ, স্লোগান, নগরীর অলি-গলিতে প্রার্থী ও সমর্থকদের প্রচারণা-নির্বাচনী প্রচারণার চেনা চেহারা। গতকাল সেই দৃশ্যই দেখল নগরবাসী।
চট্টগ্রামের ১৬ আসনে বিভিন্ন দলের প্রার্থী আছেন ১১৪ জন। নগরীর কয়েকজন প্রার্থী গতকাল শাহ আমানত (রা.) এর মাজার জেয়ারত করে প্রচারণা শুরু করেন। প্রার্থীদের নির্বাচনী কার্যালয়ও উদ্বোধন করা হচ্ছে। তারা জনগণের দুয়ারে যেতে শুরু করেছেন। প্রত্যেকে নিজের পক্ষে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। এবার অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হওয়ায় খুশি সবাই। প্রার্থীদের ভোটারদের জানাচ্ছেন উন্নয়ন ও নিজেদের পরিকল্পনার কথা। জনগণের কল্যাণে তারা ভোট চান নিজ নিজ প্রতীকে। পটিয়া, বাঁশখালী, আনোয়ারা, সাতকানিয়া, সীতাকুণ্ডসহ বিভিন্ন উপজেলায়ও চলছে প্রচার-প্রচারণা। গ্রামেগঞ্জে নীরব এলাকাগুলো এখন সরব হতে শুরু করেছে। সেখানে প্রার্থীরা প্রচারণার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। ভোটারদের দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি। এছাড়া কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি, বান্দরবানেও প্রার্থীরা প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন।

দেশের বিভিন্ন জায়গায় রাজনৈতিক উত্তাপের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ চেহারায় দেখা গেল চট্টগ্রামের দুই নেতাকে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ও বিএনপির আবদুল্লাহ আল নোমান নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে কুশল বিনিময় ও কোলাকুলি করেছেন।

উৎসব আছে, পাশাপাশি উত্তেজনাও। সোমবার প্রতীক বরাদ্দের পর প্রার্থীদের আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু হওয়ায় সরগরম হয়ে উঠেছে গোটা দেশ। তবে প্রথম দিনে কয়েকটি জেলায় সহিংসতার পর গতকাল আরো বেশি স্থানে সংঘাত ঘটেছে। তাই প্রচারের শুরুর দিনে নির্বাচনী উত্তাপ দেখে সিইসি কে এম নূরুল হুদা পরিবেশ স্থিতিশীল রাখতে সবার সহযোগিতা চেয়েছেন। তিনি বলেছেন, এটা বলার এবং বোঝার অপেক্ষা রাখে না যে ইতোমধ্যে নির্বাচনের উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে। শুধু আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে, এই পরিবেশ যেন উত্তপ্ত না হয়। উত্তপ্ত হয়ে নির্বাচনী পরিবেশ যেন ব্যাহত না হয়, ব্যাঘাত না ঘটে।
অধিকাংশ দলের বর্জনের মধ্যে দশম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার প্রেক্ষাপটে এবার সব দল নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় নিজের আশা পূরণের কথা এর আগে জানিয়েছিলেন নূরুল হুদা।

মার্কিন রাষ্ট্রদূত রবার্ট মুলার সাংবাদিকদের বলেছেন, সব দল যেন অবাধে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার এবং রাজনীতি করার সুযোগ পায়। তারা যেন শান্তিপূর্ণভাবে প্রচার চালাতে এবং সভা-সমাবেশ করতে পারে। সবাই যেন সহিংসতা থেকে দূরে থাকে।
প্রসঙ্গত, চূড়ান্ত ভোটার তালিকা অনুযায়ী চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ৫৬ লাখ ৩৯ হাজার ৩৬৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২৯ লাখ ১৪ হাজার ৪২১ জন, মহিলা ভোটার ২৭ লাখ ২৪ হাজার ৯৪২ জন। মহানগরীর ভোটার সংখ্যা ১৯ লাখ ৩ হাজার ৬৮৫ জন।
এবার নির্বাচনে প্রতি আসনে গড়ে প্রার্থী থাকছেন ছয়জনের বেশি। ভোটের আগে ২৮ ডিসেম্বর মধ্যরাত পর্যন্ত আচরণবিধি মেনে সব ধরনের প্রচার চালাতে পারবেন তারা। একাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোটার আছেন ১০ কোটি ৪২ লাখের বেশি। তিনশ আসনে ৪০ হাজার ১৮৩টি ভোটকেন্দ্রে তাদের ভোটগ্রহণের ব্যবস্থা করছে নির্বাচন কমিশন।