প্রকৃতির সাথে মিতালী: পর্যটকদের কাছে টানছে দৃষ্টিনন্দন নাফ ট্রানজিট জেটি

দীর্ঘ ৫৫০ মিটার জেটি দিয়ে হেঁটে পৌঁছানো যায় নাফ নদীর মাঝামাঝি স্থানে। আর অবলোকন করা যায় মিয়ানমারের বড় বড় পাহাড়। জেটি দিয়ে হেঁটে নাফ নদীর মাঝামাঝি স্থানে এলে তখন দেখা যায় নদের সৌন্দর্য্য। একদিকে বাংলাদেশ অন্যদিকে মিয়ানমার। নদীর পশ্চিমে সারি সারি কেওড়া বাগান। জেটির উভয় পাশে গাছের সবুজ বেষ্টনি। যেন প্রকৃতির অপূর্ব এক লীলাভূমি। বাংলাদেশ এবং মিয়ানমার ভাগ করেছে একটি নদী। যার নাম নাফ নদী। এই সৌন্দর্য্যময় জেটি ‘টেকনাফ-মিয়ানমার ট্রানজিট ঘাট’ হিসেবে উদ্বোধন করা হয়েছে। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ২০১৮ সালের ১৮ অক্টোবর নাফ নদীর ওপর নির্মিত কক্সবাজারের টেকনাফ-মিয়ানমার ট্রানজিট ঘাটের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকে পর্যটকদের কাছে এটি আকর্ষণীয় স্থানে পরিণত হয়েছে। জেটিটি এরই মধ্যে স্থানীয় ও পর্যটকদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। প্রকৃতির অপরূপ মায়া এবং কৃত্রিম সৌন্দর্য্য উপভোগে নাফ নদের জেটি এখন বিদেশি পর্যটকদেরও হাতছানি দিয়ে ডাকছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হেঁটে জেটির সৌন্দর্য্য দেখছেন অনেকে। সরেজমিনে দেখা যায়, টেকনাফ পৌরসভার পূর্ব পাশে নাফ নদের কূল ঘেঁষে ট্রানজিট কাম জাহাজঘাট ব্রিজ। এই নদের সৌন্দর্য্য অবলোকনে সব শ্রেণির দর্শনার্থীদের

পদচারণা ঘটে প্রতিনিয়ত। নির্মল হাওয়া ও উপকূলের মনোরম সৌন্দর্য্য নজর কাড়ছে সবার। নতুনভাবে নির্মিত দৃষ্টিনন্দন লম্বা ট্রানজিট জেটি বাংলাদেশের পর্যটন খাতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। টেকনাফ উপজেলা প্রকৌশল অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, সেন্টমার্টিনে পযঅটকবাহী জাহাজ চলাচল এবং মিয়ানমারের সঙ্গে বাণিজ্য সুবিধা বাড়ানোর লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) প্রায় ৩১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে জেটিটি নির্মাণ করেছে। এ জেটিতে বিশ্রামাগার, শৌচাগার ও সাতটি সিঁড়ি রয়েছে। এছাড়াও জেটি ব্যবহারকারীদের সুবিধার্থে জেটিটির সামনের দিকে ৯০ মিটার দীর্ঘ ও ৬০ মিটার প্রস্থের গাড়ি পার্কিং স্পট রাখা হয়েছে। ২০১৩ সালের ৫ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সাংসদ ব্রিজ নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রবিউল হাসান বলেন, জেটিটি এরই মধ্যে পর্যটকদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তাছাড়া জেটির মাধ্যমে নাফ নদীর মাঝামাঝি স্থানে পৌঁছানো যায়। এখানে স্থানীয় লোকজনের আনাগোনাও এখন চোখে পড়ার মতো। তবে এখনো ট্রানজিট চালু হয়নি। ট্রানজিট চালু হলে দু’দেশের লোকজনের পারাপারের সুবিধা তো থাকবেই, পাশাপাশি টেকনাফে নতুন একটি বিনোদনের ক্ষেত্র তৈরি হলো।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, সেন্টমার্টিনগামী পর্যটকদের সুবিধার্থে এবং ট্রানজিট ব্যবহারের লক্ষ্যে জেটিটি করা হয়েছে। অল্প সময়েই সহজে সেন্টমার্টিন যাতায়াত করতে পারবে। জাহাজ ভেড়ার জন্য যে রাবারগুলো লাগানোর কথা ছিল সেগুলোর কাজ পুরোপুরি শেষ হয়নি। মূলত সেন্টমার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের জন্যই এই জেটি নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু এখনো সেন্টমার্টিন যাতায়াত ও ট্রানজিট ব্যবহার চালু হয়নি। আশা করি দ্রুত সময়ে এসব বাস্তবায়ন হবে। তবে দ্রুত সময়ে জেটি বাস্তবায়িত হওয়ায় পর্যটনের নতুন ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। পর্যটন ব্যবসার প্রসার ঘটবে।