পটিয়ায় যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগ।

পটিয়া উপজেলার ধলঘাট ইউনিয়নের করলখাইন গ্রামের যৌতুকের জন্য স্বামীসহ শ্বশুর-শাশুড়ি মিলে পিয়াংকা দাশ (২৫) নামের এক গৃহবধুকে কে মারধর ও নির্যাতন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় স্ত্রী পিয়াংকা দাশ বাদি হয়ে গত ৬ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে স্বামী শ্বশুর-শাশুড়ির বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ে করেছেন। এতে আসামিরা হলেন, আনোয়ারা উপজেলার পরৈইকোড়া গ্রামের নারায়ণ বাড়ি’র নারায়ণ দাশের পুত্র স্বামী মিটন দাশ (৩২), শ্বশুর নারায়ণ দাশ (৫৫) ও শাশুড়ি আরগুরি দাশ (৫০)।
মামলা সূত্রে জানা যায়, পিয়াংকা দাশের সাথে মিটন দাশের গত ২০১৪ সালে ১৪ জুলাই হিন্দু ধর্মীয় নীতি অনুযায়ী বিয়ে হয়। এতে ৪ শত জন্য বরযাত্রী আপায়ন করা হয়। এছাড়া ফার্নিচার, টিভি, ফ্রিজসহ বিভিন্ন মালামাল যৌতুক প্রদান করা হয়। তাদের সংসারে অনন্যা দাশ নামের ৩ বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। সন্তানের জন্মের পর স্বামী বিদেশ যাওয়ার জন্য ২ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন বাদি পিয়াংকা দাশের পরিবারে কাছে। এতে পিয়াংকা দাশের পিতা মেয়ের দাম্পত্য সুখের কথা চিন্তা করে স্বামীকে ২ লাখ টাকা যৌতুক প্রদান করেন। বিদেশে গিয়ে স্বামী শ্বশুর-শাশুড়ির কূ-পরামর্শ দিয়ে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম অপপ্রচার করে। এর প্রেক্ষিতে স্বামী তার স্ত্রী সন্তানের কোন খোঁজখবর নেয়নি। একপর্যায়ে স্ত্রী বাধ্য হয়ে তার সন্তানসহ বাপের বাড়িতে চলে আসেন। পরে স্বামী বিদেশ থেকে দেশে আসলে তাকে (স্ত্রী) নিয়ে চট্টগ্রাম শহরে একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করে আসছিলেন। পরবর্তীতে তার (স্বামীর) বিদেশ যাওয়ার সময় হলে পুনরায় স্ত্রীর পিতার কাছ থেকে বিদেশ যাওয়ার জন্য ৩ লাখ টাকা দাবি করে তাকে মারধর করতে থাকেন। এরমধ্যে তিনি স্ত্রীকে না জানিয়ে রিতা দাশ নামের আরেক মহিলাকে বিয়ে করেন। তার চাহিদা মত যৌতুকের ৩ লাখ টাকা না দেয়ায় গত ২৮ আগস্ট মারধর করে বাসা থেকে বের করে দিলে তিনি (স্ত্রী) পটিয়ায় বাপের বাড়িতে চলে আসেন। এ ঘটনায় তিনি চট্টগ্রাম মেট্্েরাপলিটন আদালতে সি আর ২৭৮ নং মামলা দায়ের করে। এতে আদালত স্বামী মিটন দাশকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। পরে বিজ্ঞ আদালত আপোষের শর্তে তাকে জামিন প্রদান করলে তিনি স্ত্রী’র বাড়িতে গিয়ে বসবাস করতে থাকেন। পরবর্তীতে তিনি বিদেশ যাওয়ার জন্য আবারও ৩ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। এতে টাকা দিতে অপারগতা জানালে স্বামী তাকে মারধর করে শারীরিকভাবে আহত করেন। এতে তিনি (স্ত্রী) পটিয়া হাসপাতাল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরে যায়। বর্তমানে ১টি কন্যা সন্তান নিয়ে পিত্রালয়ে অসহায় হিসেবে বসবাস করছেন।
এ ব্যাপারে মামলা বাদি পিয়ংকা দাশ জানান, স্বামীর বিরুদ্ধে দায়ের করা নারী ও শিশু নির্যাতন মামলা প্রত্যাহার না করলে তাকে এবং তার সন্তানকে প্রাণে মারার হুমকি প্রদান করছে স্বামী মিটন দাশ। বর্তমানে তিনি তার কন্যা সন্তানকে নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানান। তিনি এ বিষয়ে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।