পটিয়ায় আব্বাস সিকদার সড়কের কাজে অনিয়মের অভিযোগে কাজ বন্ধের নির্দেশ।

পটিয়া উপজেলার কুসুমপুরা ইউনিয়নের আব্বাস সিকদার সড়কের বেহাল দশায় দীর্ঘদিন ধরে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন স্থানীয় লোকজন। এর ফলে পটিয়া আসনের এমপি সামশুল হক চৌধুরী সড়কটি জরুরি ভিত্তিতে মেরামতের জন্য নির্দেশ ও বরাদ্দ দেন। এরই প্রেক্ষিতে এলজিইডি উপজেলার কুসুমপুরা ইউনিয়নের আব্বাস সিকদার সড়কের ১ হাজার ৯শ মিটার কার্পেটিং করার জন্য দরপত্র আহবান করে।
এ দরপত্রে রাস্তার উন্নয়নের কার্যাদেশ পান মেসার্স শাহ জব্বারিয়া কনস্ট্রাকশন। গতকাল শনিবার সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় কার্যাদেশ পাওয়া প্রতিষ্ঠানটি সড়কের কাজ করছেন। কিন্তু স্থানীয়রা এ সময় অভিযোগ করে বলেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি রাস্তার এমন উন্নয়ন করেছেন, যা এলাকার মানুষ আগে কখনো দেখেন নি। একদিকে কার্পেটিং করছেন, অন্যদিকে রোলারের চাপায় তা উঠে যাচ্ছে বলেও জানান তারা। এসব ঘটনার ছবি তুলে এলাকার লোকজন ফেসবুকে ছড়িয়ে দিলে তা ভাইরাল হয়ে যায়।পরে তা পটিয়া আসনের এমপি সামশুল হক চৌধুরীর নজরে আসে। এরপর তিনি কাজ বন্ধের জন্য উপজেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিলে কাজটি বন্ধ হয়ে যায়।
স্থানীয়রা জানান, এ সড়কের উন্নয়নের নামে হরিলুট করছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ঠিকাদার ও এলজিইডি কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে উপজেলার কুসুমপুরা ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের আব্বাস সিকদার সড়কের কার্পেটিং কাজ ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে নষ্ট হয়ে গেছে। নি¤œমানের কাজ বন্ধ রাখার জন্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে গত তিন দিন আগেও এলজিইডি’র পক্ষ থেকে বলা হলেও তা আমলে নেওয়া হয়নি। ভোরে ও গোপনে কার্পেটিং রাস্তার কাজ করতে গিয়ে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
গতকাল শনিবার দুপুরে পটিয়ার সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরী ঠিকাদার, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী শংকর কুমার দে ও প্রকৌশলীকে জরুরি তলব করেন এবং কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। এলজিইডি ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২৫ লাখ টাকার এই রাস্তার কাজ শুরু করলে উপ-সহকারী প্রকৌশলী শংকর কুমার দে কাজটি নি¤œমানের হওয়ায় বন্ধ রাখার জন্য নির্দেশ দেন।
ঠিকাকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি এনামুল হক জানিয়েছেন, দাবি মতো উৎকোচ না দেওয়ায় উপ-সহকারী প্রকৌশলী শংকর কুমার দে স্থানীয়দের উসকে দিয়েছেন। পরে তারা খন্তা দিয়ে কার্পেটিং তুলে ফেলেছেন। নি¤œমানের কাজের বিষয়টি সঠিক নয় দাবি করে তিনি বলেন, এ বিষয়ে তারা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে যাবেন।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের পটিয়ার উপ সহকারী প্রকৌশলী শংকর কুমার দে জানিয়েছেন, কাজের মান কোনভাবেই ঠিক ছিল না। যার কারণে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে ৩দিন আগে কাজ বন্ধ রাখার জন্য বলা হলেও তারা কাজ বন্ধ না করে গোপনে কাজ করে গেছেন। ফলে রাস্তা থেকে কার্পেটিং ওঠে গেছে। কার্পেটিং ওঠে যাওয়ার বিষয়টি এমপি স্যার জানতে পেরে তিনি প্রকৌশলী ও ঠিকাদারকে জরুরি ভিত্তিতে তলব করে কাজ বন্ধ রাখার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। কাজটির ব্যাপারে পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।