নতুন প্রজন্মের কাছে স্বাধীনতার সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে হবে

ঢেমশা উচ্চ বিদ্যালয়ের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি বলেছেন, আওয়ামী লীগ নিছক একটি সংগঠন নয়, জাতির বিকাশের সংগঠন। জাতির উন্নয়নে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছে এটি। শিক্ষাক্ষেত্রে একদিনে বই বিতরণ করে নজির সৃষ্টি করেছে। নিরক্ষরতা হারও কমেছে। আগামী কয়েক বছর পর নিরক্ষরতা থাকবে না। শিক্ষাসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। যে কোন কাজের একজন কেন্দ্রীয় চরিত্র থাকতে হয়। স্বাধীনতার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আর উন্নয়নের প্রধান ও কেন্দ্রীয় নেতা শেখ হাসিনা। তিনি দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করার লক্ষ্যে কাজ করছেন। ইতিমধ্যে আমরা উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি পেয়েছি। আমরা এখন আত্মমর্যাদাশীল স্বাধীন জাতি। আমাদের কোন ভয় নেই। নিজেদের দেশের মালিক আমরা। আমরাই আমাদের দেশকে মনের মতো করে গড়বো।

তিনি অভিভাবকদের উদ্দেশে বলেন, আপনার সন্তানকে জঙ্গিবাদ, মাদকতা ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ সম্পর্কে সচেতন করুন। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে যারা কুৎসা রটায়, ধর্মের দোহাই দিয়ে যারা অপপ্রচার করে তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হোন। নতুন প্রজন্মের কাছে স্বাধীনতা বিরোধীদের সম্পর্কে বলুন। জাতির ভাগ্য পরিবর্তনে শেখ হাসিনা যেভাবে উন্নয়নের রোল মডেল প্রতিষ্ঠা করেছেন তা জনগণের কাছে তুলে ধরুন। সামনের নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষায় আওয়ামী লীগের পক্ষে জনমত গড়ে তুলুন। নইলে স্বাধীনতাও বিপদের সম্মুখীন হতে পারে। থমকে যাবে উন্নয়নের সব কর্মকাণ্ড।

তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, আমাদের সময়ে স্বাধীনতা ছিল না, অন্ন–বস্ত্র ছিল না, পড়ালেখার সুযোগ ছিল না। যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল অনুন্নত, বিদ্যালয়ের অবকাঠামো ছিল না, পড়ার জন্য পর্যাপ্ত আলো, বই কিছুই পাইনি। স্বল্পোন্নত ছিল দেশ। কোথাও গেলে সম্মান পেতাম না। সবাই করুণা করত। বর্তমান সরকার দেশে অভূতপূর্ব উন্নয়ন করেছে। সবখানে পরিবর্তন এসেছে। তোমাদের সময়ে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা, আলোকিত দেশ, সময়মতো বইপত্র–বৃত্তিসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা পাচ্ছ। সরকার বিশ্বের দরজা খুলে দিয়েছে। স্মার্ট ফোনের মাধ্যমে সারা বিশ্বকে মুহূর্তেই জানতে পারছ। বৈশ্বিক জ্ঞান অর্জনে অবারিত সুযোগ পাচ্ছ। তোমাদের লেখাপড়ার সাথে ভালো মানুষ হতে হবে। না হয় সমস্ত অর্জন বিফলে যাবে।

প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান বিদ্যালয়ের বার্ষিক প্রতিবেদনের দাবির জবাবে আশস্থ করে বলেন, পর্যায়ক্রমে এ বিদ্যালয়কে সরকারিকরণে কাজ করে যাবো। মাঠ ও স্কুল ভবন প্রতিষ্ঠায় সহযোগিতা করব। সাতকানিয়া উপজেলার ঢেমশা উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। গতকাল শনিবার সকাল ১০টায় বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার ও অতিরিক্ত সচিব শংকর রঞ্জন সাহা। তিনি বলেন, একটি জাতিকে ভালভাবে গড়ে তুলতে হলে শিক্ষাই প্রধান হাতিয়ার। শিক্ষা ছাড়া দেশের সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। শিক্ষার কোন বিকল্প নেই।

এতে সভাপতিত্ব করেন বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি রূপালী ব্যাংকের পরিচালক আবু সুফিয়ান। তিনি বলেন, আজকের শিক্ষার্থীরাই আগামীতে উন্নত রাষ্ট্র ও সমাজ পরিচালনা করবে। এজন্য এদেরকে দক্ষ সৈনিক হিসেবে গড়ার লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। এ স্কুলকে শ্রেষ্ঠ স্কুলে পরিণত করার জন্য শিক্ষক, অভিভাবক সহ এ অঞ্চলের মানুষদের নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে সর্বাত্মক প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছি।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোবারক হোসেন, সাতকানিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান মোল্লা, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ সদস্য মো. জসীম উদ্দীন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আজিম শরীফ, সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রফিকুল হোসেন, সাতকানিয়া উপজেলা আ’লীগ সহ–সভাপতি মাস্টার ফরিদুল আলম, সাতকানিয়া উপজেলা আ’লীগ সহ সভাপতি মোজাম্মেল হক, বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির দাতা সদস্য মোসলেম উদ্দীন, অভিভাবক সদস্য ফরিদুল আলম, অভিভাবক সদস্য রতন কান্তি দাশ, দাতা সদস্য শ্যামল সেন।

স্বাগত বক্তব্য দেন বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সদস্য সুভাষ চন্দ্র দাশ। বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দয়াল হরি মজুমদার। প্রতিবেদনে ১১১বছরের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যলয়কে সরকারিকরণের যৌক্তিক দাবি তুলে ধরে একটি খেলার মাঠসহ স্কুল ভবনের জন্য আবেদন জানান। সঞ্চালক ছিলেন বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক সুকান্ত বিকাশ ধর। বিদ্যালয়কে সরকারিকরণের দাবি জানিয়ে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক শশীভূষণ বড়ুয়া।

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন আসাদুজ্জামান জনি, হারুন উর রশীদ মানিক, ব্যাংকার আজিজুল হক, ব্যাংকার আবদুল গণি, মোর্শেদ আলম চৌধুরী, মো. কামরুজ্জামান, ডা. বিপ্লব পালিত, নারায়ণ দাশ, রমজান আলী, আরিফ চৌধুরী, আশরাফুজ্জামান অভি, মো. রিদুয়ানুজ্জামান, নাহিদুজ্জামান, ফাহাদুজ্জামান, মো. ফোরকান, তৌহিদুল ইসলাম, আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।

শুরুতেই পবিত্র কোরআন, গীতা ও বাইবেল থেকে পাঠ করা হয়। এর পর জাতীয় ও উদ্বোধনী সংগীত পরিবেশন করে যথাক্রমে মিষ্টু দাশ ও তার দল এবং প্রণমিতা ও তার দল। অনুষ্ঠানে অতিথিদের সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। শেষে প্রধান অতিথি বিজয়ী শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।