কর্ণফুলী উপজেলার আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হওয়ার দুই বছরের কাছাকাছি সময় হলেও মিলেনি নিজস্ব কার্যালয়। বর্তমানে উপজেলার শিকলবাহা ক্রসিংস্থ একটি কমিউনিটি সেন্টারের তৃতীয় তলায় উপজেলা পরিষদ এবং প্রশাসনের নিয়মিত কার্যক্রম চলছে। তবে অতি সমপ্রতি সময়ে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য জমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছিল। গতকাল বুধবার দুপুরে কর্ণফুলীর ওয়াই জংশন এলাকা ক্রসিং এ ছয় একর জায়গা বুঝে নেয় প্রশাসন। এ জায়গাতে পূর্ণাঙ্গ মডেল কমপ্লেক্স নির্মাণ হবে নবসৃষ্টি কর্ণফুলী উপজেলার জন্য। ইতিমধ্যে নতুন কমপ্লেক্স নির্মাণের জন্য মিলেছে প্রশাসনিক ও আর্থিক অনুমোদন।
জানা গেছে, ২০১৭ সালের ১৭ এপ্রিল জুলধা ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে কর্ণফুলী উপজেলার কার্যক্রম শুরু হয়। একই মাসের ২৯ এপ্রিল স্থানীয় সংসদ সদস্য ও বর্তমান ভূমিমন্ত্রী এ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এরপর দীর্ঘদিন উপজেলা প্রশাসন এবং পরিষদের অস্থায়ী কার্যালয় হিসেবে জুলধা ইউনিয়ন পরিষদ ব্যবহৃত হয়ে আসছিল। বিগত ছয় মাস পূর্বে যোগাযোগের সুবিধার্থে শিকলবাহা ক্রসিংস্থ একটি কমিউনিটি সেন্টারের তৃতীয় তলায় তা স্থানান্তর করা হয়। সেখান থেকেই ভাড়া নেয়া ভবনে চলছে কর্ণফুলী উপজেলা প্রশাসন এবং পরিষদের কার্যক্রম। নিজস্ব ভবন না থাকাতে স্বাভাবিক কার্যক্রমে কিছুটা হলেও ব্যাঘাত ঘটছে। তবে এসব দূর হচ্ছে অতিশীঘ্রই। স্থানীয় সংসদ সদস্য ও ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপির একান্ত প্রচেষ্টায় কর্ণফুলী উপজেলা মডেল কমপ্লেক্স স্থাপনের জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি প্রদান করেন। যাতে কর্ণফুলী উপজেলার নতুন কমপ্লেক্স নির্মাণ দ্রুত সম্পন্ন করা হয়।
কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সামশুল তাবরিজ জানান, উপজেলা মডেল কমপ্লেক্স স্থাপনের জন্য শিকলবাহা ক্রসিং এলাকায় ইতোমধ্যে ৬ একর জমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল বুধবার ছয় একর জায়গা উপজেলা প্রশাসন বুঝে নিয়েছে। এই জায়গাতে নির্মিত হবে নতুন উপজেলা কমপ্লেক্সের ভবন। আর্থিক অনুমোদন পাওয়ায় স্থানীয় সরকার বিভাগ কমপ্লেক্স নির্মাণের প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু করেছে। খুব শীঘ্রই এ প্রকল্পটি টেন্ডার প্রক্রিয়ায় যাবে। সূত্রে আরো জানা গেছে, শিকলবাহা ক্রসিং এলাকায় কমপ্লেক্সের জন্য জায়গা নির্ধারণ করা হলে কর্ণফুলী উপজেলা মডেল কমপ্লেক্সের জন্য দুই দফায় ৬ একর জমির অধিগ্রহণে মোট ৪৫ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। কমপ্লেক্স নির্মাণের জন্য প্রাথমিক বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৭৫ কোটি টাকা। প্রত্যেক উপজেলার মতো এখানেও মডেল কমপ্লেক্সের মধ্যে থাকবে ইউশেট যুক্ত ৪তলা তিনটি ভবন, একটি অডিটোরিয়াম এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বাসভবন। সেখান থেকে কার্যক্রম পরিচালিত হবে কর্ণফুলী উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা পরিষদের। কর্ণফুলী উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারুক চৌধুরী বলেন, প্রয়াত প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা আখতারুজ্জমান চৌধুরী বাবুর মৃত্যুর পর সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয় তারই সুযোগ্য পুত্র সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ। পরবর্তীতে ভূমিপ্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়ে কর্ণফুলীকে উপজেলা বাস্তবায়নের জন্য জোরালো ভাবে কাজ শুরু করেন। বর্তমানে তিনি ভূমিমন্ত্রীর দায়িত্বে রয়েছেন।
তাঁরই একান্ত প্রচেষ্টায় ২০১৭ সালে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু কর্ণফুলী উপজেলা। যাত্রা শুরু করার দুই বছরের মাথায় কর্ণফুলী উপজেলা মডেল কমপ্লেক্স পাচ্ছি আমরা। যা কিছু দিনের মধ্যে টেন্ডার প্রক্রিয়ায় যাবে। কমপ্লেক্স নির্মাণের জন্য ৬ একর জমির জন্য ৪৫ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। কমপ্লেক্স নির্মাণের জন্য প্রায় ৭৫ কোটি টাকা বরাদ্ধ হয়েছে। কমপ্লেক্সটি নির্মিত হলে প্রশাসনিক সেবা নিতে আসা মানুষের দুর্ভোগ অনেকটা কমে যাবে। কর্ণফুলী উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান দিদারুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপির একান্ত প্রচেষ্টায় মূলত কর্ণফুলী উপজেলা। নগরের সবচেয়ে কাছের এ উপজেলা সারা দেশের মধ্যে মডেল উপজেলা রূপান্তরে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ইতিমধ্যে ব্যাপক উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। যা বাস্তবায়ন করা গেলে কর্ণফুলীর অবকাঠামো অনেক পরিবর্তন সাধিত হবে।