ছয় দলকে নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে আজ থেকে শুরু হচ্ছে এশিয়া কাপ ক্রিকেটের ১৪তম আসর। টুর্নামেন্টের প্রথমদিনই মাঠে নামছে বাংলাদেশ ও শ্রীলংকা। জয় দিয়ে আসর শুরু করতে চায় বাংলাদেশ। শ্রীলংকার বিপক্ষে ম্যাচটির এবারের আসরে বাংলাদেশের সাফল্য নির্ভর করছে বলে দেশ ছাড়ার আগে বলেছিলেন দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। ১৯৮৬ সালে প্রথম এশিয়া কাপে অংশ নেয় বাংলাদেশ। ২০১০ সাল পর্যন্ত ৯ বার এশিয়া কাপ খেলেছে টাইগাররা। প্রতিবারই সেরা সাফল্যের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টাও করেছে। কিন্তু কোনবারই ফাইনালে উঠতে পারেনি বাংলাদেশ। অবশেষে ২০১২ সালে বাংলাদেশের স্বপ্ন পূরণ হয়। ফাইনালে খেলে টাইগাররা। কিন্তু পাকিস্তানের কাছে হেরে রানার্স–আপ হয়েই সন্তুষ্ঠ থাকতে হয় টাইগারদের। পরের আসরে আবারো ব্যর্থতার ষোলোকলা পূর্ণ করে বাংলাদেশ। তবে ব্যর্থতার ষোলোকলা পরের আসরেই মুছে ফেলে টাইগাররা। মাশরাফির নেতৃত্বে আবারো এশিয়া কাপের ফাইনালে ওঠে বাংলাদেশ। কিন্তু এবারও ভাগ্য সহায় হয়নি বাংলাদেশের। এবার ভারতের কাছে হেরে দ্বিতীয়বারের মত রানার্স–আপ হয় টাইগাররা।
তবে এবার পুরনো দুঃখ ভুলে যেতে চায় বাংলাদেশ। অতীতের ভালো পারফরমেন্স বাংলাদেশকে অনুপ্রেরণা দিবে বলে মনে করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। এশিয়া কাপে খেলতে নামার আগে তিনি বলেন, গত তিন আসরের দু’টিতে আমরা ফাইনাল খেলেছি। তাই এশিয়া কাপে আমাদের বেশকিছু ভালো স্মৃতি রয়েছে। এছাড়া এশিয়ার মধ্যে আমরা অন্যতম শক্তিশালী দল। র্যাংকিং হিসেবে আমরা তৃতীয়স্থানে রয়েছি। তাই এসব সুখস্মৃতি ও অর্জন এই আসরে ভালো খেলতে আমাদের অনুপ্রেরণা যোগাবে। দলের অন্যতম ভরসা পঞ্চপান্ডব। মাশরাফি, সাকিব, মুশফিক, তামিম ও মাহমুদুল্লাহ। গত কয়েক বছর যাবত এই পাঁচজন খেলোয়াড়ের উপরই নির্ভর করছে বাংলাদেশের সাফল্য। এই পাঁচজন মিলে খেলেছেন ৯০১টি ওয়ানডে। এমন অভিজ্ঞতা এবারের আসরে এগিয়ে রাখবে বাংলাদেশকে। এটি বলার অপেক্ষা রাখে না। কারন ওপেনার হিসেবে দলকে ভালো শুরু এনে দেয়ার কাজটা দায়িত্ব নিয়েই করছেন তামিম। সর্বশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ৩ ইনিংসে ২টি সেঞ্চুরি ও ১টি হাফ–সেঞ্চুরিতে ২৮৭ রান করেছেন তামিম। মিডল–অর্ডারে প্রয়োজন অনুযায়ী বড় ইনিংস খেলছেন মুশফিক, সাকিব ও মাহমুদুল্লাহ। দলের পেস আক্রমণে অন্যতম ভরসা অধিনায়ক মাশরাফি। ক্যারিবীয় সফরে সেটি আবারো প্রমান দিয়েছেন তিনি সিরিজের সর্বোচ্চ ৭ উইকেট নিয়ে। তার অভিজ্ঞতার সাথে তরুণদের পারফরমেন্স জ্বলে উঠলে এশিয়া কাপে শিরোপা খরা ঘুচবে বাংলাদেশের। তবে আরব আমিরাতে কন্ডিশনের সাথে দ্রুতই মানিয়ে নেয়াও চ্যালেঞ্জিং সব দলের জন্য। যে কারণে সবার আগে আরব আমিরাতে পৌঁছায় বাংলাদেশ। তবে কন্ডিশন নিয়ে খুব বেশি চিন্তিত নন বাংলাদেশের ওপেনার তামিম ইকবাল। তিনি বলেন এই উইকেটে খুব বেশি সমস্যা হবার কথা নয়। তবে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। এই কন্ডিশনে খেলার অভিজ্ঞতা আমার রয়েছে। আমার মনে হয়, দলের সবাই এই কন্ডিশনে খেলার জন্য প্রস্তুত। শ্রীলংকার বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ। এই ম্যাচ নিয়ে কোন চাপ নেই বলে জানালেন তামিম। এছাড়া এবারের আসরে কোন দলই ফেভারিট নয় বলে মনে করেন তামিম। যদিও তিনি বলছেন শ্রীলংকা খুবই ভালো দল। সমপ্রতি তাদের সাথে অনেকগুলো ম্যাচ খেলেছি। তাই শ্রীলংকার সর্ম্পকে আমাদের ভালো ধারণা রয়েছে। তবে আমাদের জন্য প্রথম ম্যাচটি অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। নিজেদের দিনে যারা ভালো করবে তারাই জিতবে। ভারত–পাকিস্তান–আফগানিস্তানও ভালো মানের দল নিয়ে এখানে এসেছে। এবারের আসরটি তাই বেশ জমজমাট হবে।ওয়ানডেতে এখন পর্যন্ত ৪৪বার মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ ও শ্রীলংকা। জয়ের পাল্লায় অনেক ভারী লংকানদের। ৩৬টি ম্যাচ জিতেছে তারা। বাংলাদেশের জয় ৬টি।