ভালোবাসার মানুষটির জন্য রাজপরিবার ছাড়তে যাচ্ছেন জাপানের রাজকুমারী আয়াকো। তিনি বিয়ে করতে যাচ্ছেন সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের এক ছেলেকে। আর এ কারণেই রাজপরিবারের প্রথা অনুযায়ী রাজকীয় সম্মান বিসর্জন দিতে হবে তাকে।
মঙ্গলবার জাপানের রাজপরিবারের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। খবর ভোগ, সিএনএন।
দেশটিতে গত দুই বছরে এই নিয়ে দুইজন রাজকুমারী সাধারণ ব্যক্তিকে বিয়ে করার ঘোষণা দিলেন।
জাপানের রাজপরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সম্রাট আকিহিতোর চাচাতো ভাই এবং প্রয়াত যুবরাজ তাকামোদোর কনিষ্ঠ কন্যা রাজকুমারী আয়াকো শিপিং প্রতিষ্ঠান এনওয়াইকে লাইনের কর্মকর্তা ৩২ বছর বয়সী কেই মোরিয়াকে বিয়ে করতে যাচ্ছেন।
এক বছরেরও কম সময় তাদের দুইজনের পরিচয়। ১২ আগস্ট তাদের বাগদান এবং ২৯ অক্টোবর টোকিওর মিজি জিনগু মন্দিরে তাদের বিয়ে অনুষ্ঠিত হবে। রাজকুমারী আয়াকো সমাজ কল্যাণে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন।
জাপানের রাজপরিবারের নিয়ম অনুযায়ী, সাধারণ ঘরের কাউকে বিয়ে করলে রাজপরিবারের ওই সদস্যকে রাজকীয় সম্মান বিসর্জন দিতে হয়। পাশাপাশি রাজকীয় সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হন তিনি। এটিই জাপানের রাজবংশের নিয়ম। তবে রাজপরিবারের কোনো সদস্য যদি চিরতরে সম্পর্ক ছিন্ন করে তাকে দশ লাখ ডলার দেয়া হয়।
গত বছরের মে মাসে আয়াকোর চাচাতো বোন ও সম্রাট আকিহিতোর নাতনি রাজকুমারী মাকো একটি আইনি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সমবয়সী কেই কোমুরোর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার ঘোষণা দেন। তবে তারা প্রস্তুতির অভাবেই বিয়ের অনুষ্ঠান ২০২০ সাল পর্যন্ত পিছিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
রাজকুমারী আয়াকো সম্রাট আকিহিতোর সরাসরি বংশধর নয়। যার কারণে রাজকুমারী মাকোর বিয়ের ঘোষণার মতো এতটা হৈচৈ পড়েনি। আয়াকো ২০১৯ সালের রাজপরিবার ত্যাগ করার পরিকল্পনা নিয়েছেন।
দুই রাজকুমারীর এমন ঘোষণার কারণে বিশ্বের সবচেয়ে পুরনো বংশগত রাজতন্ত্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
জাপানের সংবিধান অনুযায়ী, রাজপরিবারের শুধুমাত্র পুরুষ সদস্যরাই সিংহাসনের উত্তরাধিকার হন।
উল্লেখ্য,জাপানের বর্তমান সম্রাট আকিহিতো ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর সিংহাসন ছাড়ার পর তার জ্যেষ্ঠ পুত্র ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন রাজবংশের সম্রাটের আসন গ্রহণ করবেন বলে পরিকল্পনা করা হচ্ছে।দেশটির দুইশ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সম্রাটের স্বেচ্ছায় সিংহাসন ত্যাগের ঘটনাটির আইনি কাঠামো নিয়ে কাজ করা হচ্ছে।
সম্রাট আকিহিতো পিতা হিরোহিতোর মৃত্যুর পর ১৯৮৯ সালে সিংহাসনে আরোহণ করেন।জাপানের বর্তমান আইনে সম্রাটের স্বেচ্ছায় সিংহাসন ছাড়ার কোনো নিয়ম নেই। তাকে আজীবন সম্রাটের দায়িত্ব পালন করতে হয়। তবে ১৮১৭ সালে জাপানি সম্রাট কিকাকু স্বেচ্ছায় সিংহাসন ত্যাগ করেছিলেন।