ঐতিহাসিক জব্বার সওদাগরের বলীখেলায় ফাইনাল খেলায় কুমিল্লার শাহজালাল বলীকে হারিয়ে ১০৯ তম আসরের চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন চকরিয়ার বলী তারেকুল ইসলাম জীবন।
বুধবার বিকাল চারটায় নগরীর লালদীঘি মাঠে বলীখেলার উদ্বোধন করেন সিএমপি’র ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কমিশনার মো. মাসুদুল হাসান। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন জব্বারের বলীখেলাকে বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে স্বীকৃতির জন্য সরকারের কাছে আহ্বান জানান।
শক্তিশালী প্রতিযোগী শাহজালালের সাথে প্রায় ১৫ মিনিট লড়াই করেন জীবন বলী। ফাউল করার কারণে চ্যাম্পিয়নের শিরোপা থেকে ছিটকে পড়েন কুমিল্লার শাহজালাল বলী। সমানে-সমানে লড়ে যাচ্ছিলেন জীবন ও শাহজালাল। শক্তি প্রয়োগ করে শাহজালাল খেলে গেলেও কৌশলী ছিলেন জীবন। প্রথমে জীবন বলী ভালো খেললেও শেষে কুমিল্লার শাহজাহান বলী দুর্দান্ত খেলেন। শাহজালাল বলী আক্রমনাত্তক খেলায় তাকে ডিসকোয়ালিফাইড করে রেফারি। কিছুতেই মেনে নিছে পারছে না কুমিল্লার শাহজালাল বলী।
খেলায় দায়িত্ব পালনকারী রেফারি সাবেক কাউন্সিলর মো. আবদুল মালেক বলেন, অনৈতিক ভাবে মাথা দিয়ে আঘাত করায় কুমিল্লার শাহজালালকে ডিসকোয়ালিফাইড করা হয়েছে। একই সাথে জীবন বলীকে চ্যাম্পিয়ন হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
চুড়ান্ত পর্বে চ্যাম্পিয়ন তারিকুল ইসলাম জীবন বলী বলেন, কক্সবাজার জেলার চকরিয়ার তার গ্রামের বাড়ি। বিগত ৯ বছর যাবৎ বলীখেলা খেলছেন । তার স্বপ্ন ছিল জব্বারের বলীখেলায় চ্যাম্পিয়ন হবে। এবার সে স্বপ্ন পূরণ হয়েছে।
এর আগে সেমিফাইনালে মহেশখালীর মোহাম্মদ হোসেনকে হারিয়ে কুমিল্লার শাহজালাল বলী, উখিয়ার জয়নাল বলীকে হারিয়ে চকরিয়ার তারেকুল ইসলাম জীবন বলী ফাইনালে উন্নীত হন।
আবদুল জব্বার স্মৃতি কুস্তি প্রতিযোগিতা ও বৈশাখী মেলা কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর জহর লাল হাজারীর সভাপতিত্বে বলীখেলায় বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন স্পন্সর প্রতিষ্ঠান বাংলালিংক ডিজিটাল কমিউনিকেশন্স লিমিটেডের রিজিওনাল ডিরেক্টর সৌমেন মিত্র।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে ৪০০ বর্গফুটের ৫ ফুট উঁচু বালুর মঞ্চে বলীখেলায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, রাঙামাটি, কুমিল্লাসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে ৮৬ জন বলী অংশগ্রহন করে।
আয়োজকেরা জানান, গতবছর ঐতিহাসিক জব্বারের বলীখেলার ১০৮ তম আসরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ৭০জন বলী অংশ নেন। উখিয়ার শামছু বলীকে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেন রামুর দিদার বলী।
এর আগে ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত ১০৭তম আসরে জব্বারের বলীখেলার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লড়াইয়ে রামুর দিদার বলী ও উখিয়ার শামছু বলী কেউ কাউকে নির্ধারিত সময়ে হারাতে না পারায় সিলেকশন পদ্ধতিতে শামছু বলীকে চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হয়েছিল।