পৃথিবীতে যে কালো আপেলও আছে এটা হয়তো অনেকেই জানেন না। কিন্তু এটা সত্য যে, শুধু লাল,গোলাপি বা সবুজ আপেল নয়, পৃথিবীতে আছে কালো আপেলও। সেগুলো খুব সুস্বাদুও বটে।
চীনের তিব্বতে কালো আপেল চাষ হয়। সারা বিশ্বজুড়ে বাগানে সাধারণত চাষ করা হয় লাল, সবুজ, হলুদ বা তিন রঙের মিশ্রিত রঙের আপেল। তবে চীনের তিব্বতে অতি গাঢ় বেগুনি আপেলকে বস্তুত কালো আপেলই বলা যায়।
কালো ডায়মন্ড আপেল হচ্ছে হুয়া নিউ আপেলের (চীনে রেড ডালিসিয়াস নামে পরিচিত) একটি প্রজাতি, যা চীনের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল তিব্বতের নিইংচি অঞ্চলে অনন্য গাঢ় রক্তবেগুনি রঙ ধারণ করে। চীনা কোম্পানি ডান্ডং তিয়ানলু শেনগ নং ই-কমার্স ট্রেড লিমিটেড সমুদ্রতল থেকে ৩,১০০ মিটার উচ্চতার ৫০ হেক্টর ফলের বাগান তৈরি করেছে, এই রহস্যময় ফলটির উৎপাদন বাড়ানোর জন্য। এটিকে কালো আপেল চাষের জন্য আদর্শ স্থান হিসেবে তৈরি করা হয়েছে।
এই ফলগুলো কালো হয়ে যাওয়ার প্রধান কারণ হলো দিন এবং রাতের মধ্যকার তাপমাত্রায় উল্লেখযোগ্য পার্থক্য এবং তীব্র সূর্যালোক এবং অতিবেগুনি আলো, যা থেকে তাদের ত্বক গাঢ় লাল থেকে কালো-বেগুনি রঙের বৈশিষ্ট্য ধারণ করে।
‘কালো ডায়মন্ড আপেল রক্তবর্ণ, উজ্জ্বল এবং গঠনশৈলী চমৎকার। বাইরে থেকে আপেল দেখতে প্রায় মোমবাতির মোমের মতো এবং হীরার মতো সুন্দর। এসব কারণেই আপেলগুলোর নাম ব্লাক ডায়মন্ড আপেল’Ñ বলেছেন ডান্ডং তিয়ানলু শেনগ নং ই-কমার্স ট্রেড লিমিটেডের বাজার পরিচালক ইউ ওয়েনক্সিন।
বেইজিং, সাংহাই, গুয়াংঝু এবং শেনঝনে শুধু বাছাইকৃত উঁচুমানের সুপার মার্কেটগুলোতে ছয় থেকে আটটি বিরল আপেল ফলের উপহার প্যাকেজ বিক্রি করা হয়। চীনা ভাষার টেনসেন্ট নিউজের খবরে থেকে জানা যায়, কালো ডায়মন্ড আপেলের প্রতিটার দাম ৫০ ইয়ান।
ইউ ওয়েনক্সিন বলেন, চীনে সীমিত উৎপাদন এবং বিতরণ খরচ তুলনামূলকভাবে খুব বেশি হওয়ায় উচ্চমূল্যের কালো ডায়মন্ড আপেল বাজারে দামি ফল হওয়ার অন্যতম কারণ। বেশির ভাগ উপহার প্যাকেজে ৬-৮টি আপেল বিক্রি করা হয়। গত বছর চীনের প্রথম সারির শহরগুলোর উচ্চমানের সুপার মার্কেটগুলোতে এসব আপেল বিক্রি করা হয়েছিল, ক্রেতারা এ ফলগুলো খুবই সাদরে গ্রহণ করেছিল।
বিশেষ ভৌগোলিক অবস্থার সাথে সাথে কালো ডায়মন্ড আপেলগুলোর চাহিদা বাড়লে চাষিরা এ প্রজাতির আপেল উৎপাদনে আগ্রহী হয়ে উঠবে বলে মনে করা হচ্ছে। কালো ডায়মন্ড আপেলের উৎপাদনের পদ্ধতি রহস্যপূর্ণ রয়েই গেছে। এমনকি অনেক অভিজ্ঞ আপেল উৎপাদনকারীরাও এফল চাষের পদ্ধতি জানে না। এ ব্যাপারে সম্পর্কে বেশি তথ্য পাওয়া যায়নি, এমনকি অনলাইনেও তেমন কিছু দেখতে পাওয়া যায়নি।
যদিও ফল উৎপাদনকারীরা অনলাইনে দাবি করেন যে, রহস্যময় ‘কালো ডায়মন্ড আপেল’-এর যেসব ছবি অনলাইনে প্রচার করা হয়েছে। এতে ফলগুলোকে সত্যিকারের রঙের চেয়ে বেশি গাঢ় করে তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু কেউ এসব আপেলে হাত না দেয়া পর্যন্ত কোনটি সঠিক তা জানার উপায় নেই।
সূত্র : ইন্টারনেট