চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্য ৩২৯ কোটি ৫০ লাখ টাকার বাজেট ঘোষণা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সভা কক্ষে ৩০ তম বার্ষিক সিনেট অধিবেশনে উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্ত্বে এই বাজেট ঘোষণা করেন ভারপ্রাপ্ত রেজিষ্ট্রার কে এম নুর আহমদ।
এসময় বাজেট বক্তৃতায় রেজিষ্ট্রার বলেন, ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) কাছ থেকে ৪৩১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা চাওয়া হয়েছিল। চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন থেকে ৩২৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয় ধরা হয়েছে ১৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
এবারের বাজেটে গবেষণা খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২ কোটি টাকা। যা মোট বাজেটের ০.৬১ শতাংশ। এছাড়া বিশেষ গবেষণা মঞ্জুরী খাতে ৭৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন।
এদিকে বাজেটে বরাবরের মতো এবারও শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের বেতন খাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এবছর এ খাতে মোট বরাদ্দ ১৯৮ কোটি ২০ লাখ টাকা, যা মোট বাজেটের ৬০.১৫ শতাংশ।
এছাড়া চিকিৎসা, উৎসব, ধোলাই ভাতাসহ মোট ১০টি খাতে ভাতা বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৮২ কোটি ১০ লাখ টাকা। শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের পেনশন খাতে বরাদ্দ ৬৯ কোটি ১০ লাখ টাকা ও পরিবহন ব্যয় খরচ ধরা হয়েছে ২ কোটি ২০ লাখ টাকা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ আয়ের মধ্যে শিক্ষার্থীদের বেতনসহ বিভিন্ন খাত থেকে আয় ধরা হয়েছে ১৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এর মধ্যে ভর্তি পরীক্ষার ফর্ম বিক্রি হতে আয় ৬ কোটি টাকা।
উল্লেখ্য, ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে চবির সংশোধিত বাজেট ছিল ৩০৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা।
এদিকে বাজেট বক্তৃতায় বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আব্দুল মান্নান বলেছেন, আমরা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহকে বেকার তৈরির কারখানা হিসেবে দেখতে চাই না। বর্তমান সরকার শিক্ষাখাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ দিয়ে আসছে। এই বরাদ্দকে সঠিক ভাবে কাজে লাগিয়ে শিক্ষার্থীদের দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
গবেষণার প্রতি গুরুত্বারোপ করে ইউজিসি চেয়ারম্যান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ হলো জ্ঞান সৃষ্টি করা। গবেষণা ছাড়া জ্ঞান সৃষ্টি হবে না। তাই ছোট ছোট বিষয় নিয়ে গবেষনা শুরু করতে হবে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরেণ্য সমাজবিজ্ঞানী শিক্ষাবিদ বুদ্ধিজীবী প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী বলেছেন, বাঙালি বীরের জাতি, মাতৃভাষার জন্য বাংলা মায়ের দামাল ছেলেরা প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আহবানে ৩০ লাখ মানুষ অকাতরে জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন, ২ লাখ জায়া-জননী-কন্যা সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেন। বঙ্গবন্ধু তনয়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার সুযোগ্য-বলিষ্ট নেতৃত্বে বিশ্বে বাংলাদেশ এখন একটি উন্নয়নের রোল মডেলে রূপান্তরিত হয়েছে। এ আনন্দ-গৌরব সকলের। এ প্রেক্ষাপটে বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোবাবেলা এবং দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রাখতে মহান মুক্তিযুদ্ধের গৌরবোজ্জ্বল অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, মানবিক চেতনা সমুন্নত রেখে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত শিক্ষা দর্শন বাস্তবায়নের মাধ্যমে আধুনিক বিজ্ঞানমনস্ক মানবসম্পদ উৎপাদন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম লক্ষ্য।
সিনেট অধিবেশনে ইউজিসি চেয়ারম্যান ও সাবেক চবি উপাচার্য প্রফেসর ড. আব্দুল মান্নান ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পর্ষদের সদস্যবৃন্দরাও উপস্থিত ছিলেন।