চন্দনাইশ উপজেলার ঐতিহ্যবাহী নারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ফাতেমা জিন্নাহ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের শ্রেণি কক্ষের অভাবে পাঠদানসহ সকল প্রকারসহ পাঠ্য ক্রমিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৬৩ সালে স্থানীয় শিক্ষানুরাগী প্রয়াত এড. আহমুদুর রহমান এলাকার নারী শিক্ষা প্রসারের লক্ষে ১ একর ১৮ শতক জমির উপর বাঁশের বেড়া দিয়ে বিদ্যালয়টি নির্মাণ করেন। তৎকালীন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট মো. আলী জিন্নাহ’র ছোট বোন ফাতেমা জিন্নাহ এমএলএ’র নামে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘ সময় ধরে সুনামের সহিত পরিচালিত হয়ে আসছিল।
গত ২০১১ সালে বিদ্যালয় মূল ভবনটি পুড়ে বিদ্যালয়ের সম্পূর্ণ আসবাবপত্র, মূল্যবান দলিল, বিজ্ঞানাগার, লাইব্রেরির বই, কম্পিউটার ল্যাব পুড়ে সম্পূর্ণ ভষ্মিভূত হয়। ফলে বিদ্যালয়ে আসবাবপত্র সংকটসহ বিভিন্ন সমস্যার কারণে পাঠদান ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি শ্রেণি কার্যক্রম ব্যাহত হচেছ। বর্তমানে বিদ্যালয়ে ৭’শ শিক্ষার্থীর জন্য এমপিওভূক্ত ৮ জন, বিদ্যালয় প্রদত্ত বেতনে ৪ জন শিক্ষক পাঠদান করে যাচ্ছেন। এ সকল শিক্ষার্থীর জন্য ১টি দ্বিতল, ২টি ১তলা ভবন রয়েছে। কক্ষ সংকটের কারনে বিজ্ঞানাগার, কমনরুম, লাইব্রেরী, এবাদত খানা, ক্রীড়া কক্ষ, কম্পিউটার ল্যাব, ডাইনিং রুম করা সম্ভব হচ্ছে না। তাছাড়া ৬ষ্ঠ, ৭ম, ৮ম শ্রেণিতে ২টি করে শাখাসহ ৮টি ক্লাস পরিচালনার জন্য কক্ষ সংকুলান না হওয়ায় ছাত্রীরা দাড়িয়ে ক্লাস করতে দেখা যায়।
তাছাড়া ধর্ম ও গ্রুপ ক্লাস করার সময় এ সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করে। এমনকি ১টি কক্ষে ২টি গ্রুপের ক্লাস নিতে দেখা যায়। কক্ষ সংকটের কারণে শিক্ষক মিলনায়তন, সহকারি প্রধান শিক্ষক, লাইব্রেরিয়ান, অফিস সহকারির কক্ষ করা সম্ভব হচ্ছেনা বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। বিদ্যালয়ের চারপাশে বাউন্ডারি থাকলেও মাত্র কয়েকটি ফলজ গাছ, ১টি টিউবওয়েল, ১টি দৃষ্টি নন্দন গার্ডেন রয়েছে। প্রবেশ দ্বারে ১টি দৃষ্টি নন্দন তোরণ রয়েছে বিদ্যালয়ের নাম সম্বলিত। উপজেলার সম্মূখের বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় সরকারি বিভিন্ন কর্মসূচী পালিত হওয়ার পাশাপাশি জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার মূল কেন্দ্র এ বিদ্যালয়ে রয়েছে।
তাছাড়া সরকারি বিভিন্ন জাতীয় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠান, কর্মশালাও এ বিদ্যালয়ে হয়ে থাকে। বিগত ১৫ সালে ১টি ১তলা ভবণ নির্মানের পর থেকে আর কোন সরকারি ভাবে ভবণ নির্মিত না হওয়ায় শ্রেণি কক্ষ সংকটে রয়েছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ ব্যাপারে তারা স্থানীয় সংসদ সদস্য, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন। অন্যথায় বর্তমান সরকারের নারী শিক্ষা উন্নয়নের যে যুগান্তকারী পদক্ষেপ তা ভেস্তে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন বিজ্ঞ মহল।