চন্দনাইশে পুরোদমে আলু রোপণ শুরু

চন্দনাইশের জমিতে আলু চাষ শুরু করেছে কৃষকরা।শীতের শুরু থেকে উপজেলার দোহাজারী, হাছনদন্ডী, চাগাচতর, বৈলতলী চর এলাকায় পুরোদমে আলু রোপণের ধুম পড়েছে। ২টি পৌরসভা ও ৮টি ইউনিয়নে চলছে এই কৃষি কার্যক্রম। সহস্রাধিক কৃষক এই কৃষি কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত।
মৌসুমেও চন্দনাইশ ও সাতকানিয়ার আলুচাষিরা যথানিয়মে অগ্রহায়ণ মাসের প্রথমদিকে জমিতে পুরোদমে আলু রোপণ শুরু করে। আলুর চারা গজিয়ে উঠতে আরো কয়েকদিন সময় লাগবে। চন্দনাইশে চলতি মৌসুমে ৬৩০ হেক্টর জমিতে আলুর চাষ হয়েছে বলে কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়। চলতি মৌসুমে, চন্দনাইশের সাতবাড়িয়া, হাছানদন্ডী, দোহাজারী, চাগাচর, চন্দনাইশ পৌরসভা ও সাতকানিয়ার খাগরিয়া, নলুয়া, চরতি আমিলাইশ এলাকায় সবচেয়ে বেশি আলু চাষ হয়। এ আলু চাষের ওপর নির্ভরশীল রয়েছে তিনটি হিমাগার। মরা শঙ্খচরে প্রচুর পরিমাণ আলুর চাষাবাদ হয়। চলতি মৌসুমেও একইভাবে এসব এলাকায় ইতোমধ্যে জমিতে দেশিয় জাতের বীজ আলু রোপণ প্রায় শেষপর্যায়ে। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকার কারণে আলু চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের একাধিক কৃষকের সাথে কথা বলে জানা যায়, ইতোমধ্যে তাদের আলু ক্ষেতের ৯০ শতাংশ জমিতে আলুর বীজ বপন করা হয়েছে। এভাবে পুরো চরের প্রায় জমিতে আলু ক্ষেতে ভরপুর। জমিতে আলু চাষ করতে গিয়ে ইতোমধ্যে কৃষকদের লাখ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। কৃষকদের মধ্যে অনেকেই লাভের আশায় দাদন ব্যবসায়ীর নিকট থেকে চড়া সুদে টাকা নিয়েছেন বলেও জানান।
চন্দনাইশের দোহাজারীর পৌর এলাকার কৃষক মো. আয়ুব জানান, তিনি ২ বিঘা জমিতে আলু চাষ করতে জমির খাজনাসহ দেড় লক্ষাধিক টাকা ব্যয় হয়েছে। একইভাবে চাগাচরের মোমেন, আবদুচ ছালাম ও হাছনদন্ডীর আবদুল গফুরসহ অর্ধ সহস্রাধিক কৃষক চলতি মৌসুমে লাভের আশায় আলুর বীজ রোপণ করেছেন। কৃষকেরা জানান, তারা সরকারিভাবে কোনরকম প্রশিক্ষণ পান না। তাছাড়া আলু বা সবজি চাষের জন্য সরকারিভাবে সহজশর্তে কোনরকম ঋণ সুবিধা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন। কোনরকম আবহাওয়ার বৈরী প্রভাব পড়লে আলু ক্ষেতে ভাইরাসের আক্রমণ হয়। তখন কৃষি অফিসের লোকজন তাদেরকে কীটনাশক ব্যবহারের ব্যাপারে ধারণা দিয়ে থাকেন বলে জানান। এ সকল এলাকার কৃষকেরা অধিকাংশ সবজি চাষের ওপর নির্ভরশীল। কৃষকেরা জানান, চন্দনাইশে তিনটি হিমাগার রয়েছে। এ সকল হিমাগার থেকে তারা অঙ্কুরিত আলু বীজ প্রতি কেজি ৪৫ টাকা এবং অঙ্কুরিত ছাড়া বীজ ৩৫ টাকা করে কিনতে হয়েছে। তাদের মতে, প্রতি ২ শতক জমিতে ৬ কেজি আলুর বীজ রোপণ করা যায়। আগামী ৩ মাসের মধ্যে এ সকল রোপিত আলু বীজ থেকে আলুর উৎপাদন হওয়ার পর কৃষকেরা বাজারে বিক্রি করে বিক্রিত অর্থ থেকে দাদন ব্যবসায়ীর সুদের টাকাসহ পরিশোধ করার পাশাপাশি জমির খাজনার টাকার পরিশোধ করবেন। তাছাড়া জমিতে সার ও কীটনাশকের টাকা বাদ রেখে কৃষকের লভ্যাংশের টাকা হিসেব করা হবে। উৎপাদিত আলু বাজারের চাহিদা মেটানোর পর পাশ্ববর্তী ৩টি হিমাগারে মজুত রেখে পরবর্তীতে এ আলু সারাবছরের চাহিদা মেটাবে।