চন্দনাইশে কৃষকের মুখে স্বস্থির হাসি।

এই বছরে চন্দনাইশ উপজেলার শঙ্খ তীরবর্তী এলাকায় শীতকালীন সবজির ভালো ফলন হয়েছে। বাজারে উঠতে শুরু করেছে মুলাসহ রকমারি শীতকালীন সবজি। এবং দামও ভাল থাকায় হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখেও। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এখানকার কৃষকেরা শীতকালীন সবজির আবাদ করে বেশ লাভবান হচ্ছে। কৃষকেরা জানান, ধানের আবাদ করতে গিয়ে অব্যাহত লোকসান পোষাতেই তারা একটার পর একটা শীত মৌসুমে শীতকালীন সবজির আবাদ করে চলেছেন। সবজির আবাদে এখন তারা লাভের মুখ দেখতে শুররু করেছেন। ফলে দিন দিন বাড়ছে শীতকালীন সবজির আবাদ। এ সকল এলাকায় সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শঙ্খ নদীর উভয় পাড়ে পাহাড়ের বিভিন্ন টিলায় এবং পাহাড় পার্শ্ববর্তী জমিতে বেগুন, লাউ, শিম, মূলা, ফুলকপি, বাঁধাকপি, বরবটি, টমেটো, বিভিন্ন প্রজাতির শাকসহ শীতকালীন রকমারি সবজিতে ভরে গেছে পাহাড় ও শঙ্খ নদী তীরবর্তী মাঠের পর মাঠ। কৃষক-কৃষনারীও অত্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করছে সবজি ক্ষেত পরিচর্যায়। যেন অবসর নেই তাদের। কেউ সবজি ক্ষেতে সেচ দিচ্ছেন, কেউবা প্রে, কেউবা পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজে ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছে। ক্ষেত থেকেই কৃষকেরা পাইকারী বিক্রি করে দিচ্ছে অনেক সবজি। তাছাড়া এ সকল এলাকার কৃষকেরা সকালে সবজি ক্ষেত থেকে সবজি তুলে পার্শ্ববর্তী ঐতিহ্যবাহী কাঁচা বাজার দোহাজারী রেলওয়ে মাঠে প্রতিদিন সকালে নিয়ে আসে শীতকালীন সবজি।বিগত ২ বছর ধরে শঙ্খ নদীর দু’পাড়ের কৃষকেরা মুলাসহ বিভিন্ন শীতকালীন সবজি চাষ করে লোকসানে পড়তে হয়েছে প্রতিকুল আবহাওয়ার কারনে। এ এলাকার সবজি চাষীরা জানালেন প্রতি বছর বর্ষা মৌসুম শেষ হওয়ার আগেই বেশী দামে বিক্রির আশায় এ অঞ্চলে আগাম মুলাসহ রকমারি শীতকালীন সবজি চাষ করেন তারা। চলতি মৌসুমে শেষ সময়ে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় শীতকালীন সবজি মুলাসহ রকমারি সবজি ফলন ভাল হয়েছে। ফলে শীতকালীন সবজি আগাম বাজারে এসেছে। আগাম শীতকালীন সবজি বাজারে আনতে পারায় ভাল দাম পাচ্ছেন কৃষকেরা। চাষী ফজল আহমদ, আবদুস ছবুর জানালেন এ বছর তারা পৃথক পৃথকভাবে ২ কানি এবং ৩ কানি জমিতে মুলা চাষ করে। তাদের খরচ হয়েছে ৩ লাখেরও বেশী। বর্তমান বাজারে মুলার যে দাম রয়েছে তাতে তাদের উৎপাদিত মুলা ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন। বর্তমান বাজারে প্রতি মণ মুলার দাম ১২ থেকে ১৪ শত টাকা। যা আগামীতে আরো ১৫ দিনের অধিক এ দাম পাওয়া যাবে বলে তারা জানান। চন্দনাইশ দোহাজারী পৌরসভা দায়িত্ব প্রাপ্ত উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মৃনাল কান্তি দাশ জানালেন, মুলাসহ শীতকালীন সবজির ফলন চলতি মৌসুমে ভাল হয়েছে। দোহাজারী পৌর এলাকায় ৫ শতাধিক একর জমিতে মুলার চাষাবাদ হয়েছে, দামও পাচ্ছে কৃষকেরা। দোহাজারী রেলওয়ে মাঠসহ চন্দনাইশের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, শীতকালীন সবজির মধ্যে বেগুন, মূলা, বরবটি, তিতকরল, লাউ, মিষ্টি কুমড়া, ভেন্ডী, টমেটো, শীম বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। তবে কৃষকেরা জানালেন। আগামী সপ্তাহে পুরোদমে শীতকালীন সবজি বাজারে আসার পর শতাধিক গাড়ীতে করে সবজি বিভিন্ন বাজারে চলে যাবে। সে সাথে প্রতিদিন কোটি টাকার সবজি বিক্রি হবে বলে তারা অভিমত ব্যক্ত করেছেন। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বলেন, চন্দনাইশের শঙ্খনদী তীরবর্তী এলাকা ও পাহাড়ের বিভিন্ন এলাকায় চলতি মৌসুমে শীতকালীন সবজি উৎপাদন হওয়ায় এলাকার চাহিদা মিটিয়ে চট্টগ্রাম শহরেও নিয়ে যাচ্ছে। এতে করে কৃষকেরাও শীতকালীন সবজি সময়মত বের করতে পারায় দাম ভাল পাচ্ছেন। ফলে তাদের অতীতের কিছু ক্ষতি পুষিয়ে কৃষকেরা লাভের মুখ দেখছেন