চট্টগ্রামে ১৩ লাখ পিস ইয়াবাসহ দুইভাই গ্রেফতার

চট্টগ্রাম নগরীর হালিশহর থানার শ্যামলী হাউজিং সোসাইটির একটি বাসা থেকে ১৩ লাখ পিস ইয়াবাসহ দুইভাইকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এসময় একটি প্রাইভেট কারও জব্দ করা হয়।

শুক্রবার ভোরের দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে ওই বাসায় অভিযান চালায় নগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল।

আটক আশরাফ আলী (৪৭) এবং মো. হাসানের (২২) তারা উভয় বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাসিন্দা মৃত তৈয়ব আলীর ছেলে। আশরাফ এলাকায় ধনাঢ্য ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত।

পুলিশ জানায়, আশরাফ নিজেই মিয়ানমারে গিয়ে ইয়াবা কিনে আনে। কোস্টগার্ডের চোখ এড়াতে সে বিশেষ কৌশলে পানির নিচ দিয়ে ইয়াবার চালান আনতো। সর্বশেষ ১৩ লাখ ইয়াবার চালানও আশরাফ ইয়াঙ্গুন থেকে নৌপথে চট্টগ্রামে নিয়ে এসেছে।

সিএমপির গোয়েন্দা পুলিশের এসি মইনুল ইসলাম জানান, মিয়ানমার থেকে নৌকা যোগে ইয়াবাগুলো নিয়ে এসে নগরীর হালিশহর হাউজিং সোসাইটির মসজিদ সংলগ্ন একটি বাসার অভিযান চালানো হয়। বাসায় তাদের শোবার ঘর থেকে ৩ লাখ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। এরপর তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গ্যারেজের ভিতর থাকা প্রাইভেট কার থেকে আরও ১০ লাখ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।

শোবার ঘরে ইয়াবার যে প্যাকেটগুলো পাওয়া গেছে সেগুলো ছিল পানিতে ভেজা।
এসি মইনুল ইসলাম আরও জানান, এই চক্রটি এয়ারটাইট বাক্সে পলিথিন মুড়িয়ে রশি বেঁধে ইয়াবার বাক্সগুলো সাগরে ফেলে দিতো। এরপর ওই রশি বোটে বেঁধে টেনে আনা হতো ইয়াবাগুলো। এ কৌশলে চক্রটি এর আগেও ইয়াবা চোরাচালান করেছে। এ ঘটনায় আটকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মো. কামরুজ্জামান জানান, এক সপ্তাহ আগে আশরাফ নিজেই মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুনে যায়। সেখান থেকে ইয়াবা নিয়ে প্রথমে একটি ট্রলারে কক্সবাজারের সেন্টমার্টিন দ্বীপ আসে। সেন্টমার্টিন থেকে একটি স্পিডবোট নিজে চালিয়ে যায় সাগরের কুতুবদিয়া চ্যানেলে। সেখানে স্পিডবোট নষ্ট হলে এক লাখ টাকায় একটি মাছ ধরার বড় নৌকা ভাড়া করে সীতাকু-ের ভাটিয়ারিতে এসে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ইয়াবাগুলো খালাস করে। সেখান থেকে প্রাইভেট কারে ইয়াবাগুলো নিয়ে যাওয়া হয় বাসায়।

পুলিশ পরিদর্শক আরও জানান, প্রায় প্রতিমাসেই আশরাফ দেশের বাইরে যায়। কখনো সিঙ্গাপুরে, কখনো থাইল্যান্ড যাবার কথা বলে আসলে সে যায় মিয়ানমারে। সেখান থেকে সরাসরি ইয়াবা নিয়ে আসে সে। মিয়ানমারে যারা ইয়াবা তৈরি করে তারা বাকিতেও আশরাফকে ইয়াবা দেয়। বিক্রির পর সেই টাকা আবার হুন্ডির মাধ্যমে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া ইয়াবা কেনার টাকাও লেনদেন হয় হুন্ডির মাধ্যমে। গত পাঁচ বছর ধরে এই নিয়মেই আশরাফ ব্যবসা করে আসছে।

পুলিশ সূত্র জানায়, বান্দরবানে থাকতে ছোট ছোট ইয়াবার চালান আনতেন আশরাফ আলী। পাঁচ বছর আগে একবার ধরা পড়ে কারাগারে ছিলেন। এরপর চট্টগ্রাম মহানগরে পরিবার নিয়ে বসবাস করে আসছেন।