নগরীর রেলওয়ে পলোগ্রাউন্ড মাঠে শনিবার (৩ মার্চ) শুরু হচ্ছে চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। এরই মধ্যে মেলার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে আয়োজক প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি।
২৬তম এ মেলা সম্পর্কে অবহিত করতে বৃহস্পতিবার (১ মার্চ) দুপুরে আগ্রাবাদ ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মেলা কমিটির কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ জামাল আহমেদ। এসময় চেম্বার সভাপতি ও মেলা কমিটির উপদেষ্টা মাহবুবুল আলম ও চেম্বার পরিচালক এম এ মোতালেব, সিআইপি উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মাসব্যাপী মেলার উদ্বোধনী দিনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান। ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, সংসদ সদস্য এম এ লতিফ, এফবিসিসিআই’র প্রথম সহসভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
মেলা চলবে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত। দর্শনার্থীদের জন্য টিকেটের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ টাকা। পার্টনার কান্ট্রি হিসেবে থাকছে থাইল্যান্ড। ভারত, ইরান, রমিশাস ২৩ হাজার বর্গফুট জায়গা নিয়ে বিভিন্ন স্টলের মাধ্যমে তাদের পণ্য বিক্রি করবে।
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা উপলক্ষ্যে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন মাহবুবুল আলম
লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, চার লাখ বর্গফুটের অধিক জায়গাজুড়ে আয়োজিত মেলায় এবার ১৭টি প্রিমিয়ার গোল্ড প্যাভিলিয়ন, ৪টি মিনি মেগা প্যাভিলিয়ন, ১১টি প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন, ৮টি স্ট্যান্ডার্ড প্যাভিলিয়ন, ১৭২টি প্রিমিয়ার মেগা স্টাল, ২৩টি মেগা স্টাল, ১৪টি প্রিমিয়ার গোল্ড স্টাল, ১৩ টি প্রিমিয়ার স্টাল, ১৪টি স্ট্যান্ডার্ড স্টল, তিনটি রেস্টুরেন্ট, পার্টনার কান্ট্রি থাই জোন ও তিনটি আলাদা জোন নিয়ে ৪৫০ এর অধিক প্রতিষ্ঠান মেলায় অংশ নিচ্ছে।
অন্যান্য বছরের মতো থাইল্যান্ড মেলার পার্টনার কান্ট্রি হিসেবে অংশগ্রহণ করছে জানিয়ে সৈয়দ জামাল বলেন, থাইল্যান্ড ৫ হাজার ৪০০ বর্গফুট জায়গা নিয়ে মেলায় অংশ নেবে।চেম্বারের অনেক কর্মকাণ্ডের মধ্যে বাণিজ্য মেলা অন্যতম উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২৫ বছর ধরে দেশের শিল্পের প্রসার ও মান উন্নয়নে চেম্বার মেলার আয়োজন করে আসছে। বাংলাদেশে এসএমই খাতের বিকাশের লক্ষ্যেই মূলত মেলার আয়োজন।
মেলা কমিটির কো-চেয়ারম্যান বলেন, প্রতিবারের মতো মেলায় বাড়তি নিরাপত্তা বলয় থাকবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সবসময় নিয়োজিত থাকবেন। তাদের জন্য মেলা চলাকালীন সময় পর্যন্ত স্থায়ী ক্যাম্প তৈরি করা হয়েছে। পাশাপাশি মেলায় ব্যাংক বুথও স্থাপন করা হয়েছে। মেলা চলাকালীন প্রায় প্রতিদিন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা মেলাস্থল পরিদর্শন করবেন।
সংবাদ সম্মেলনে মেলার উপদেষ্টা চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, আজ থেকে ২৫ বছর আগে এমএ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেশিয়ানে ১০ থেকে ১৫টি স্টল নিয়ে ছোট্ট পরিসরে বাণিজ্য মেলা শুরু হয়েছিল। সেই মেলায় এখন প্রতিদিন লক্ষাধিক মানুষ আসেন। মেলা থেকে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে অপেক্ষা করেন চট্টগ্রামের মানুষ।
মেলা বেচাকেনার জন্য নয়, দেশিয় পণ্যের প্রদর্শন এবং আন্তর্জাতিকভাবে দেশিয় পণ্যের পরিচিত পাওয়ার ক্ষেত্রেও ভূমিকা রাখে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
মাহবুবুল আলম বলেন, বাংলাদেশে দুটি বড় বাণিজ্য মেলা হয়। সরকারিভাবে ঢাকায় বাণিজ্য মেলা অনুষ্ঠিত হলেও বেসরকারিভাবে সবচেয়ে বড় বাণিজ্য মেলার আয়োজন করে চট্টগ্রাম চেম্বার। মেলায় দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। বাংলাদেশ উৎপাদিত পণ্য প্রচার ও প্রসারই এ মেলার একমাত্র উদ্দেশ্য।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে চেম্বার পরিচালক অহিদ সিরাজ (স্বপন) প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।