কুয়াশাঢাকা ভোর, কনকনে শীতের কুয়াশা উপেক্ষা করে কৃষকেরা ফুলকপি ও বাঁধাকপি ক্ষেতে ছুটে চলে প্রতিদিন। কাকডাকা ভোরে কৃষকেরা তাদের ক্ষেত থেকে ফুলকপি ও বাঁধাকপি বোঝাই করে নানা ধরনের টুকরি ও লালসালু কাপড় পরিয়ে নিয়ে আসে দোহাজারী রেলস্টেশন বাজারে।
পূর্বের আকাশে সূর্য উঠার আগেই ফসলের মাঠ থেকে এ সবজিগুলো তুলে এনে দোহাজারী রেলওয়ে বাজারে সারিবদ্ধভাবে সাজানো সাদা সাদা ফুলকপি রাখার টুকরি সবার নজর কাড়ে। শীত মৌসুমে চিরচেনা এ দৃশ্য। প্রতিদিন সকালে এ অঞ্চলটি যেন ফুলকপির রাজ্যে পরিণত হয়। সেখানে আসে চট্টগ্রাম শহর থেকে পাইকারি ক্রেতারা। তারা পছন্দসই ফুলকপি ও বাঁধাকপি ক্রয়বিক্রির জন্য নিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়। কাঁধে ভার করে কৃষকেরা ক্ষেত থেকে ফুলকপিসহ বিভিন্ন সবজি আনে এ বাজারে বিক্রির জন্য। কৃষকদের অভিযোগ পাইকারি সবজি ক্রেতারা সিন্ডিকেট করার কারণে তারা ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। চলতি মৌসুমে শঙ্খনদীর তীরবর্তী বৈলতলী, বরমা, চাগাচর, দোহাজারী সদর, রায় জোয়ারা, হাতিয়াখোলা, লালুটিয়া, পার্শ্ববর্তী কালিয়াইশ, কেওচিয়া, চরতি, আমিলাশসহ বিভিন্ন এলাকায় ফুলকপি, বাঁধাকপির বাম্পার ফলন হয়েছে। ফুলকপি ও বাঁধাকপি ছাড়াও এসব এলাকায় বেগুন, মূলা ও গাজরসহ বিভিন্ন শীতকালীন সবজির বেচাকেনা চলে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে শঙ্খনদীর তীরবর্তী কৃষকেরা শীতকালীন মৌসুমে সবজি উৎপাদন করে ব্যাপক লাভবান হয়। তাছাড়া সারাবছরেই কোন না কোন সবজি চাষ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করেন এ জনপদের মানুষ। সেইজন্য দোহাজারীকে দক্ষিণ চট্টগ্রামের সবজি ভার নামে আখ্যায়িত করা হয়েছে। এ এলাকার উৎপাদিত সবজি পার্শ্ববর্তী এলাকাসহ মহানগরের চাহিদা পূরণ করে থাকে। তবে দোহাজারী এলাকায় সবজি সংরক্ষণের জন্য কোনরকম হিমাগার না থাকায় উৎপাদিত সবজি দিনে দিনেই বিক্রয় করতে হয়। শুধুমাত্র আলুর জন্য হিমাগার থাকায় সংরক্ষণ করার সুযোগ রয়েছে। চন্দনাইশের ফুলকপি সুস্বাদু হওয়ায় এর চাহিদাও প্রচুর। দোহাজারী রেলওয়ে মাঠে পাইকারি বাজারে ফুলকপি ৩০-৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা স্থান পরিবর্তন হয়ে জায়গা বিশেষে ১০-১৫ টাকা বৃদ্ধিতে বিক্রি হচ্ছে। বর্তমানে চন্দনাইশের শঙ্খ নদীর তীরবর্তী এলাকায় ব্যাপকভাবে ফুলকপি ও বাঁধাকপিসহ শীতকালীন সবজির বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষকেরা বেজায় খুশি। এভাবে চলবে আরো ২ মাস।
আলােকিত সাতকানিয়া/এইচএম