চট্টগ্রামে পানির ট্যাঙ্কে মা-মেয়ের লাশ

চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী থানা এলাকার একটি ভবনের পানির ট্যাঙ্কের ভেতর থেকে বৃদ্ধা মা ও মেয়ের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত দুইজন হলেন চাঁদপুর জেলার মতলব পুরানবাজার এলাকার ফজলুর রহমানের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম (৯৭) ও তার মেয়ে অবসরপ্রাপ্ত রূপালী ব্যাংক কর্মকতা শাহ মেহেররুন নেসা বেগম (৬৭)।

রোববার দুপুরে নগরীর খুলশী থানার আমবাগান আটারমিল এলাকায় মেহের মঞ্জিল নামের একটি ভবনের পানির ট্যাঙ্কের ভেতরে লাশদুটি দেখতে পান স্থানীয়রা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। তারপর লাশ দুটি উদ্ধার করে। পুলিশ ধারনা করছেন তাদেরকে পরিকল্পিতভাবে খুন করে পানির রির্জাভ ট্যাঙ্কের ভেতর লাশ লুকিয়ে রাখে।

সরেজমিনে দেখা যায়, আটার মিল এলাকায় একটি পাহাড়ের ওপর দুটি বাড়ি। স্থানীয়দের কাছে এটি আবাসিক এলাকা হিসেবে পরিচিত। নির্জন ইটের পথ পেরিয়ে প্রবেশ করতে হয় ভবনদুটিতে। এই দুটি ভবনের একটির মালিক মেহেরুন নেছা। মা মনোয়ারা বেগমকে নিয়ে নিজের ভবনের নিচতলায় থাকতেন তিনি। পুরো ভবনটি চারতলার কাঠামো হলেও কেবল নিচতলার কাজই শেষ হয়েছে। নিচ তলায় মা- মেয়ে থাকতেন।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মনোয়ারা বেগমের পাঁচ মেয়ে ও চার ছেলে। এর মধ্যে দুই ছেলে মারা গেছেন। দুই মেয়ে ও এক ছেলে দেশের বাইরে থাকেন। এক ছেলে থাকেন ঢাকায়, এক মেয়ে চট্টগ্রামের ফৌজদারহাটে এবং অন্য মেয়ে থাকেন ময়মনসিংহে। নয় ছেলেমেয়ের মধ্যে কেবল মেহেরুন নেছাই বিয়ে করেননি। মাকে নিয়েই ছিল তার সংসার।

নিহত মেহেরুন নেসার ভাগিনা বেলাল উদ্দিন বলেন, এটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। ধারণা করছি আমার খালাদের সম্পত্তি ও টাকা আত্মসাতের জন্য তাদের খুন করা হয়েছে। আমার খালা প্রায় সময় বলতেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা খুব বিরক্ত করছেন। এ জায়গা বিক্রি করে দেবো। ক্রেতা দেখো।

নিহত মেহেরুন নেসার এক প্রতিবেশী বলেন, মেহেরুন নেসার ছোট ভাই মাসুদ আমেরিকা থেকে সকালে বোনের মোবাইলে ফোন দিয়ে নম্বর বন্ধ পান। পরে আমাকে ফোন দিয়ে খোঁজ নিতে বলেন। আমি রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় গিয়ে দেখি গেইট বন্ধ। পরে নির্মাণাধীন দ্বিতীয় তলা দিয়ে বাড়ির ভেতর গিয়ে জিনিসপত্র এলোমেলো ও আলমারি ভাঙা দেখতে পাই। পরে পুলিশকে খবর দেই।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) আব্দুল ওয়ারিশ বলেন, লাশ ময়নাতদন্ত শেষে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে। কে বা কারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সেটিও খতিয়ে দেখা হবে।

খুলশী থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন বলেন, মা-মেয়ে যে বাড়িতে থাকতেন তার ঘরের মেঝেতে রক্তের দাগ পাওয়া গেছে। ঘরের ভেতরে আলমারি খোলা ছিল, বিভিন্ন জিনিসপত্র এলোমেলো করা ছিল। যেহেতু কেবল দুই নারীই ওই বাসায় বাস করতেন তাই প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে কেউ পরিকল্পিতভাবে তাদের হত্যা করে পানির ট্যাঙ্কে ফেলে চলে যায় হত্যাকারীরা। এ ব্যাপারে পুলিশ তদন্ত করে দেখছেন।