ভাঙছে খাল, বিধ্বস্ত হচ্ছে বেড়িবাঁধ-ব্রিজ; বিপন্ন হচ্ছে জনজীবন। কিন্তু নজরদারি নেই সংশ্লিষ্ট পানি উন্নয়ন বোর্ডের। খাল পাড়ের বাসিন্দারা আবেগ-উৎকণ্ঠায় কালযাপন করছেন বলে জানা গেছে।
সরেজমিনে পরিদর্শনকালে দেখা গেছে, অতীত ও সাম্প্রতিককালের বন্যাবিধ্বস্ত খালের বেড়িবাঁধসমূহ সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষের জন্য একপ্রকার মরণফাঁদ। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে প্রাণহানির আশংকা, ভয়-ভীতি ও আতঙ্কে ওই এলাকার লোকজন বিনিদ্র রজনী যাপন করে থাকেন। উপজেলার টংকাবতী, ডলু, হাতিয়া, হাঙ্গর, কূলপাগলী, থমথমিয়া প্রভৃতি খালসমূহ উল্লেখযোগ্য। টংকাবতী খালের বেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত ও ভাঙন অব্যাহত থাকায় চরম্বা ইউনিয়নের রাজঘাটা, কলাউজান ইউনিয়নের মিয়াজি পাড়া, রসুলাবাদ, চিববাড়ি এলাকা সংলগ্ন পাড়া, আমিরাবাদ ইউনিয়নের তেওয়ারীখীল, চেয়ারম্যান ঘাটা, রাজঘাটা, ঘোনাপাড়া, মহুরী পাড়া, বণিক পাড়া, জলদাশ পাড়া, তুলাতলি বাজার, ধোপা পাড়া প্রভৃতি এলাকার লোকজন রয়েছে আতঙ্কে। একই ইউনিয়নে ডলুখালের অব্যাহত ভাঙনে আতঙ্কে রয়েছে পশ্চিম আমিরাবাদস্থ ব্রিজের উত্তর ও দক্ষিণাংশের বেড়িবাঁধ তথা যাতায়াত সড়কসংলগ্ন এলাকার লোকজন। হাতিয়ার খালের বানের পানিতে বিধ্বস্ত হয় আধুনগর ইউনিয়নের হিন্দু পাড়া ও পাল পাড়া সংলগ্ন বেড়িবাঁধ। উক্ত এলাকা ডলু ও হাতিয়ার খালদ্বয়ের বানের পানির মিশ্র প্লাবনে প্লাবিত হয় প্রতি বছর। ডলু খালের ভাঙনে বিধ্বস্ত হয় চাঁন্দা ব্রিজ ও খয়রাতি খাল ব্রিজ। বেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত অব্যাহত রয়েছে উত্তর হরিণা মিয়াজি পাড়া ও নারিশ্চা গ্রামের অংশে। অপরিকল্পিতভাবে বালি উত্তোলনে পুটিবিলার সরই খালের ব্রিজ ও বেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত হয়। টংকাবতী খালের ভাঙনে চরম্বা ইউনিয়নের রাজঘাটা এলাকার বিশাল জনবসতি খালের গর্ভে বিলীন হচ্ছে।
হাঙর খালের বানের পানিতে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পদুয়া ইউনিয়নের জনবসতি এলাকা, ফসলী ক্ষেত ও হাঙ্গর ব্রিজের উপরিভাগের জনবসতি এলাকা প্রভৃতি। অব্যাহত খালের পাড় ভাঙন ও বেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত হওয়ার কারণে বিভিন্ন খালের পাড়ের জনবসতির বাসিন্দারা আবেগ-উৎকণ্ঠা ও আতঙ্কে কালযাপন করছেন। কোন কোন স্থানে বাড়িঘর খালের গর্ভে ধসে পড়ায় লোকজন অন্যত্র আশ্রয় নিয়ে কালযাপন করছেন। বিশেষ করে পেঠান শাহ’র পুরাতন বাড়ি সংযুক্ত পাড়ার কয়েকটি ঘর বর্তমানে মারাত্মকভাবে খালের গর্ভে ধসে পড়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। যেকোন সময় প্রাণহানিসহ বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি ঘটতে পারে। আর্থিক দুরাবস্থার কারণে অন্যত্র বসতবাড়ি তৈরি করে আশ্রয় নিতে পারছেন না ভাঙনকবলিত এলাকার লোকজন। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার লোকজন জানিয়েছেন, তাদের ক্ষয়ক্ষতির প্রতি পানি উন্নয়ন বোর্ডের নজরদারি নেই। তারা খালের পাড় সংলগ্ন জনবসতি এলাকার ভাঙন রোধ ও বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ পুনঃ মেরামতের জন্য জরুরি ভিত্তিতে সরকারের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন। খবর দৈনিক পূর্বকোণ।