কিরাত সম্মেলনে ধর্মপ্রাণ মানুষের ঢল

কিরাত সম্মেলনে ধর্মপ্রাণ মানুষের ঢল

চট্টগ্রামের জামিয়তুল ফালাহ জাতীয় মসজিদে হাজারো মুসলমানদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘১৯তম আন্তর্জাতিক কিরাত সম্মেলন-২০১৯’। শনিবার (০৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে এ সম্মেলন শুরু হয়। আন্তর্জাতিক এ কিরাত সম্মেলনে অংশ নেন বিশ্বের অনেক খ্যাতিমান ক্বারি।

শাহাদাতে কারবালা মাহফিল পরিচালনা পর্ষদের ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কিরাত সম্মেলনে ধর্মপ্রাণ মানুষের উপস্থিতিতে জামিয়াতুল ফালাহ প্রাঙ্গন মুখরিত হয়ে উঠে। দেশের শিল্পপতি, সুফিসাধক সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে সম্মেলনে উলামায়ে কেরাম, বুদ্ধিজীবী, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক ও সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিতি ছিলেন।

কোরআনের সুন্দর তেলাওয়াত ও সুরে মুগ্ধ করেন মিশরের বিশ্বখ্যাত ক্বারি শাইখ ইয়াসির শারকাভি, দক্ষিণ আফ্রিকার আব্দুর রহমান সাদিয়ান, তুরস্কের ক্বারি ইয়াশার চৌহাদার, ইরানের ক্বারি হামীদ শাকেরনেজাদ, ফিলিপাইনের ক্বারি নো’ মান পিমবায়াবায়া এবং বাংলাদেশের খ্যাতিমান ক্বারি শাইখ আহমদ বিন ইউসুফ আল-আযহারী।

ধর্মীয় ও দৃষ্টিনন্দন পরিবেশে মসজিদের প্লাজায়, মাঠে ও আশপাশে মুসল্লিদের জন্য এবং মসজিদের নিচতলায় মহিলাদের জন্য এলইডির মাধ্যমে তেলাওয়াত শোনার বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়। ইকরা’র উদ্যোগে এবং আন্জুমান-এ রাহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট ও গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশের সহযোগিতায় কিরাত সম্মেলনে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. আবদুচ ছালাম, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ আবদুল মান্নান, আন্জুমান ট্রাস্টের সিনিয়র সহ-সভাপতি মুহাম্মদ মুহসিন, সেক্রেটারি জেনারেল আনোয়ার হোসেন, পিএইচপি ফ্যামিলির পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম রিংকু।

এছাড়া আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন ক্বারি, আঞ্জুমান ট্রাস্ট, গাউছিয়া কমিটি বাংলাদেশ ও শাহাদাতে কারবালা মাহফিল পরিচালনা পরিষদের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সুফি মিজানুর রাহমান বলেন, পবিত্র কুরআন মাজিদ মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অমর মুজেযা। মানবজাতির হিদায়তের জন্য আল্লাহ তাআলা তার কালাম মহানবীর উপর নাযিল করেন। কুরআন মাজিদকে বুকে ধারণ করলে পৃথিবীর কোন অপশক্তি মুসলমানদেরকে পরাজিত করতে পারবেনা।

তিনি বলেন, আসুন আমরা কুরআন মাজিদকে ভালোবাসি, আমাদের ছেলে সন্তানকে কুরআন মাজিদ শিক্ষা দিই। এতে আমাদের মঙ্গল এবং আমাদের দেশের জন্য মঙ্গল। পরকালেও আমরা পবিত্র কুরআন মাজিদের সুপারিশ অর্জন করতে সক্ষম হবো।

কেরাত সম্মেলনে সমাজে মাদক ও সন্ত্রাস নির্মূলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে উল্লেখ করেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার আবদুল মান্নান।

এধরনের আয়োজনের জন্য পিএইচপি ফ্যামিলির প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন তিনি। তিনি বলেন, ধন সম্পদ অনেকের আছে। কিন্তু ভাল কাজে ব্যয়ের মানসিকতা সবার থাকে না। বরং বিদেশে টাকা নিয়ে নানা অপকর্ম করে। তাই ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজন প্রশংসার দাবি রাখে।

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম বলেন, বিপুল পরিমান অর্থ ব্যয় করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ক্বারিদের সাথে যোগাযোগ করে কেরাত সম্মেলন করছেন পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। এটা অনেক কষ্টের কাজ। এরপরও বছরের পর বছর ধরে তিনি করে যাচ্ছেন। এ ধরনের ভাল কাজ সবাই করতে পারে না।

চট্টগ্রামে আন্তর্জাতিক কেরাত সম্মেলনের প্রবর্তন করায় পিএইচপি ফ্যামিলিকে ধন্যবাদ জানিয়ে আঞ্জুমান ট্রাস্টের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মহসিন বলেন, এ সম্মেলন আগে হতো না। এখানে আয়োজনের পর থেকে দেশ ছাড়িয়ে বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করছে। আগামীতেও এ সম্মেলন অব্যাহত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।