নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পাশাপাশি পরিবহন মালিকদের ডাকা ধর্মঘটের কারণে সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে রাস্তায় বেরিয়ে বিপাকে পড়েছে বন্দরনগরীর মানুষ।হঠাৎ করে সড়ক থেকে গণপরিবহন ‘উধাও’ হওয়ায় অসহনীয় দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
রোববার (০৫ আগস্ট) সকাল থেকে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিবহন সংকটে দুর্ভোগ বেড়ে চলেছে। নগরের বহদ্দারহাট, মুরাদপুর, চকবাজার, ২ নম্বর গেইট, কালুরঘাট, আন্দরকিল্লা, নিউ মার্কেট, কাজিরদেউরি, অক্সিজেন মোড়, শাহ আমানত সেতুসহ বিভিন্ন স্থানে কর্মস্থলগামী মানুষজনকে রাস্তার পাশে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। এমনকি সিএনজিচালিত অটোরিকশা, রিকশা, অ্যাপসভিত্তিক পরিবহন সেবা পাঠাও, উবারেরও দেখা মিলছে কম। বেশিরভাগ মানুষ হেঁটে বা রিকশায় করে বিভিন্ন গন্তব্যে যাচ্ছেন। অল্প কিছু অটোরিকশা থাকলেও তা ফাঁকা পাওয়া যাচ্ছে না।
নগরের দূরপাল্লার কাউন্টারগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে। কিছু কিছু যাত্রীকে কাউন্টারের সামনে ফিরে যেতে দেখা গেছে। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন অফিস ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগামী লোকজন।
সাইফুল হক নামে এক যাত্রী বলেন, আজকে সপ্তাহের প্রথম দিন, অফিসে তো যেতেই হবে। বাসা থেকে বেরিয়ে কোন সিএনজি অটোরিকশা পাচ্ছিলাম না। পরে দ্বিগুণ ভাড়ায় এ সিএনজিটি নিয়ে বহদ্দারহাট যাচ্ছিলাম। মাঝখানে মোটরসাইকেলবাহী ৩ পরিবহনশ্রমিক গাড়িটি থামিয়ে দিলো এবং না যেতে বাধ্য করলো। আন্দোলনের নামে দেশে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে। অনেক হয়েছে, প্রশাসনের এবার এসব আন্দোলন থামানো দরকার বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
প্রায় এক ঘণ্টার মতো দাড়িয়ে থাকার পর অটোরিকশা খুঁজছেন শারমিন সুলতানা। তিনি বলেন, অফিসে যাওয়ার জন্য সকাল সাতটা থেকে অপেক্ষা করছি। প্রায় এক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকলেও বাস পাচ্ছি না। অটোরিকশা মাঝে মাঝে পাওয়া গেলেও দাম চাচ্ছে দ্বিগুণের বেশি। কেমনে যাব সেই চিন্তা করছি।
প্রসঙ্গত: গত ২৯ জুলাই কুর্মিটোলায় বাসচাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর সড়কে নেমে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে বেশ কিছু গাড়িও ভাঙচুর করা হয়। আগুন দেয়া হয় বেশ কয়েকটি গাড়িতে। পরে বৃহস্পতিবার সরকারের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নিয়ে তাদের ঘরে ফেরার আহ্বান জানানো হলেও তাতে আস্থা পায়নি আন্দোলনকারীরা। তারা লাইসেন্স পরীক্ষা করায় নতুন পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের জেরে নিরাপত্তার অজুহাতে তিন দিন ধরে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বাস বন্ধ রেখেছে মালিক ও শ্রমিক। আর এই বাস না চালানোর কোনো ঘোষণাও দেয়া হয়নি। ফলে বিভিন্ন আন্তঃজেলা টার্মিনালে গিয়েও বিপাকে পড়ে মানুষ।