এশিয়া কাপে খেলতে আরব আমিরাত গেল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল

এশিয়ান ক্রিকেটের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই এশিয়া কাপে অংশ নিতে গত রাতেই আরব আমিরাতের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেছেন টাইগার ক্রিকেট দলের সদস্যরা। তবে দলের সাথে যেতে পারেননি ওপেনার তামিম ইকবাল এবং পেসার রুবেল হোসেন। তবে শংকার কোন কারণ নেই। ভিসা জটিলতার কারনে গতরাতে যেতে পারেননি । আজ ভিসা পেলে আগামীকাল আরব আমিরাত রওয়ানা হবেন এই দুইজন সহ ম্যানেজার এবং প্রধান নির্বাচক। ওয়েস্ট ইন্ডিজে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে দুর্দান্ত দু‘টি সিরিজ কাটানোর পর বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সামনে এখন নতুন চ্যালেঞ্জ এশিয়া কাপ। বহুজাতিক টুর্নামেন্টের মতো এশিয়া কাপ ক্রিকেটই বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে আকর্ষণীয় ও সম্ভাবনাময়। কেননা এশিয়া কাপের গত তিন আসরের দুবারই যে ফাইনাল খেলেছে টাইগাররা। আর এবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্য স্থির করে এশিয়া কাপে অংশ নিতে গেছে বাংলাদেশ দল। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় এমিরেটস এয়ারলাইনসের সরাসরি ফ্লাইটে আরব আমিরাতের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় এশিয়া কাপের জন্য বাংলাদেশ স্কোয়াড। পরিবারের সাথে যুক্তরাষ্ট্রে থাকা সাকিব আল হাসান সরাসরি সেখান থেকেই দলের সাথে যোগ দেবেন।

তবে শুধু সাকিব আল হাসানকে ছাড়াই নয়, মাশরাফিরা দেশ ছেড়েছেন দলের ম্যানেজার ও প্রধান নির্বাচককে ছাড়াই। একদম শেষ মুহূর্তে এশিয়া কাপের ম্যানেজারের দায়িত্ব পাওয়া খালেদ মাহমুদ সুজন ও দলের প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু দলের সাথে যেতে পারবেন না ভিসা জটিলতার কারণে। শুরুতে খালেদ মাহমুদ সুজনের ওয়েস্ট ইন্ডিজ যাওয়ার কথা চূড়ান্ত না হওয়ায় তার পেপারওয়ার্ক করা যায়নি সময়মতো। যার ফলে মেলেনি ভিসা। আর নান্নুর ব্যক্তিগত ঝামেলার কারণে বিলম্বিত হচ্ছে ভিসা পেতে। তারা এখনো জানেন না ঠিক কবে দলের সাথে যোগ দিতে পারবেন তারা। তবে এশিয়া কাপ শুরুর আগেই যে তারা টুর্নামেন্টের ভেন্যুতে উপস্থিত থাকবেন বলে আশা করছেন প্রধান নির্বাচক নান্নু।

আগের অন্যান্যবারের চেয়ে ভিন্ন ফরম্যাটে হবে এবারের এশিয়া কাপ। যেখানে অংশগ্রহণকারী ছয় দল প্রথম পর্বে খেলবে দুই গ্রুপে ভাগ হয়ে। সেখান থেকে দুই গ্রুপের শীর্ষ দুই দলকে নিয়ে সুপার ফোর বা মূল পর্ব। প্রথম পর্বে ‘বি‘ গ্রুপে রয়েছ বাংলাদেশ। গ্রুপে টাইগারদের প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান। টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচেই ১৫ সেপ্টেম্বর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলবে মাশরাফি বাহিনী। পরে ২০ সেপ্টেম্বর গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলবেন মাশরাফি–সাকিবরা। এশিয়া কাপকে সামনে রেখে গত ২৭ আগস্ট থেকে অনুশীলন করেছে বাংলাদেশ দল। পুরো কোচিং স্টাফ নিয়ে অনুশীলন করে নিজেদের প্রস্তুত করেছেন মাশরাফি–তামিমরা। এখন নিজেদের সেরাটা মাঠে দিতে অপেক্ষায় রয়েছে টাইগাররা। গত তিন আসরের দুটিতে ফাইনালে খেলা বাংলাদেশ এবারে চাইছে শিরোপা জিততে। তবে কাজটা বেশ কঠিন হবে মাশরাফির দলের জন্য। কারন প্রথম ম্যাচেই খেলতে হবে শ্রীলংকার বিপক্ষে। তারপর আফগানিস্তান বাধা টপকে সুপার ফোর পর্ব নিশ্চিত করতে হবে মাশরাফির দলকে। আর সেখানে প্রতিটা দল একে অপরের মোকাবেলা করবে। এরপর পয়েন্ট তালিকার সবার উপরের দুটি দল খেলবে ফাইনালে। আর সে ফাইনালের দুই দলের একটি হতে চাইছে বাংলাদেশ।

মাত্রই সিপিএল খেলে এসে আমিরাতগামী দলের সাথে যোগ দেওয়া মাহমুদউল্লাহ বেশ আত্মবিশ্বাসী। তিনি বলেন এবার ভালো কিছুই হবে। যদি আত্মবিশ্বাসের কথা বলি, আমরা দল হিসেবে খুব ভালোভাবে যাচ্ছি । কারণ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সর্বশেষ সিরিজে খুব ভালো ক্রিকেট খেলে আমরা সিরিজ জিতেছি। আর এশিয়া কাপের কথা যদি বলি, গত এশিয়া কাপটা আমাদের ভালো গেছে। আমরা দুইটা এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলেছি। এর সাথে এটাও বলবো যে, প্রতিটি দলই ভালো এবং সবাই ভালো ক্রিকেট খেলছে। প্রতিটি ম্যাচই তাই আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, প্রতিটি ম্যাচেই আমাদের ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে। আমিরাতের গরম ও উইকেট নিয়ে বেশ কথা হচ্ছে। মাহমুদউল্লাহও গরমের ব্যাপারটা মাথায় রাখছেন। আরব আমিরাতের কন্ডিশন একটু কম বা বেশি আমাদের মতোই। কিন্তু গরমটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ হবে। কিন্তু আমরা পেশাদার ক্রিকেটার। আমাদের মানিয়ে নিতে হবে। রিলাক্স হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আফগানিস্তানের বিপক্ষে বা যে কোনো দলের বিপক্ষে আমাদের সেরাটাই খেলতে হবে। সব দলই আমাদের কাছে সমান। দুবাই–আবুধাবিতে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের খুব বেশি খেলার অভিজ্ঞতা নেই। মাহমুদউল্লাহ মনে করিয়ে দিলেন, শীর্ষ তিন জনেরই সেটি আছে। তামিম খেলছে, সাকিব খেলেছে, মুশফিক খেলেছে। ওখানকার কন্ডিশন সম্পর্কে আমরা জানি। একটা নির্দিষ্ট দিনে আমরা কতোটা ভালো ক্রিকেট খেলছি সেটা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সেটা করার দিকেই মনোযোগী।

তথ্যসূত্রে- দৈনিক আজাদী