মিনি অপারেশন থিয়েটার সম্বলিত অ্যাম্বুলেন্স বাংলাদেশে এনেছে বি. কে. অটোমোবাইলস। ভারতভিত্তিক ফোর্স মটরসের তৈরি ‘ডেডিকেটেড অ্যাম্বুলেন্স’ ধরনের এ গাড়িটি প্রদর্শিত হয়েছে দ্বিতীয় ইন্দো-বাংলা অটোমোটিভ শো-তে।
মেলায় প্রতিষ্ঠানটির প্যাভিলিয়নে গিয়ে চোখে পড়ে অ্যাম্বুলেন্সটি। দর্শনার্থীদেরও আগ্রহ ছিলো অ্যাম্বুলেন্সটি ঘিরে। ফোর্স মটরস এবং বি. কে. অটোমোবাইলসের দাবি, শুধু অ্যাম্বুলেন্স বিবেচনায় নিয়ে ডিজাইন করা অ্যাম্বুলেন্স-মাইক্রো উপমহাদেশে এটিই প্রথম।
এ বিষয়ে বি. কে. অটোমোবাইলসের কর্ণধার আবদুল করিম বলেন, আমাদের দেশে ডেডিকেটেড কোনো অ্যাম্বুলেন্স নেই। মাইক্রোবাসকে পরিমার্জন করে অ্যাম্বুলেন্সে রূপ দেওয়া হয়। তবে সেগুলো মোটেও মেডিকেল স্ট্যান্ডার্ড নয়। একটি অক্সিজেন সিলিন্ডার আর একটি বেড ছাড়া কিছুই থাকে না সেগুলোতে। কিন্তু এই গাড়িটি অ্যাম্বুলেন্সের বিষয় বিবেচনায় নিয়েই বানানো হয়েছে। শুধু প্রাথমিক চিকিৎসা নয় বরং ছোটখাটো সার্জারি করার ব্যবস্থাও আছে এখানে। এটি ছোট একটি অপারেশন থিয়েটার। এতে বেসিন, তিনটি স্ট্রেচার, চিকিৎসকের বসার ব্যবস্থা আছে। এছাড়াও নার্স, অন্যান্য মেডিকেল স্টাফ এবং রোগীর তিনজন স্বজন বসতে পারবেন গাড়িটিতে।
দুর্ঘটনায় পড়া কোনো মুমূর্ষু রোগীর চিকিৎসার জন্য পরিবেশকে উপযুক্ত করেই অ্যাম্বুলেন্সটি বানানো হয়েছে বলেও জানান আবদুল করিম। এছাড়াও এতে আছে অক্সিজেন সিলিন্ডার।
অপারেশনের জন্য ভেতরে বিভিন্ন সরঞ্জামফোর্স মটরসের ভারতীয় প্রতিনিধি সুনিল ফ্যাংক বলেন, যখন কোনো দুর্ঘটনা ঘটে তখন, ঘটনাস্থল থেকে রোগীকে হাসপাতালে আনার সময়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং স্পর্শকাতর। মেডিকেলের ভাষায় এটিকে ‘গোল্ডেন আওয়ার’ বলে। এই সময়টিতে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয় তার ওপর অনেকখানি নির্ভর করে রোগীর জীবন। এ বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়েই আমরা বিশেষ ডিজাইন নিয়ে এই অ্যাম্বুলেন্স তৈরি করেছি।
প্রতিষ্ঠানটির আরেক প্রতিনিধি জয়েশ সরকার বলেন, এমন ডেডিকেটেড অ্যাম্বুলেন্স শুধু ভারত বা বাংলাদেশে প্রথম নয়, বরং পুরো উপমহাদেশে প্রথম। ভারতে এখন পর্যন্ত আমরা প্রায় ৮০ শতাংশ বাজার দখল করেছি। এখন আমরা বাংলাদেশকে বিবেচনায় নিয়েছি। এখানকার অ্যাম্বুলেন্সের যে চিত্র তার থেকে বহুগুণে ভালো আমাদের এই অ্যাম্বুলেন্স। সরকারি ও বেসরকারি সবধরনের হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের এ অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে চিকিৎসা সেবা দিতে পারে।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অ্যাম্বুলেন্সটির আরেকটি বিশেষ দিক হচ্ছে, এর সাইরেনের আওয়াজ যেন রোগীর জন্য ক্ষতিকারক না হয়, গাড়িটির নকশায় সেদিকে বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ভেতরের পরিবেশ মুমূর্ষু রোগীর জন্য সহায়ক করতে ব্যবহার করা হয়েছে বিশেষ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থা।
মার্সিডিজ ৬.১১ আর ২৫০০ সিসির ক্ষমতার ইঞ্জিন সম্পন্ন অ্যাম্বুলেন্সটির বাংলাদেশে বাজার দর নির্ধারণ করা হয়েছে ২২ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। গাড়িটির প্রস্তুতকারক এবং আমদানিকারকদের দাবি, চিকিৎসা সম্পর্কিত যেসব যন্ত্রাংশ অ্যাম্বুলেন্সে থাকা দরকার তার সবই আছে এতে। তাই বাড়তি কোনো যন্ত্রাংশ কিনতে হবে না। চিকিৎসক শুধু তার নিজস্ব যন্ত্রপাতি নিয়ে এলেই অ্যাম্বুলেন্সটি রোগীর সেবায় কাজ লাগবে।